আগামী ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হবে ভর্তুকিহীন ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদনপত্র জমা নেওয়া। এর জন্য খাদ্য দফতরের নিয়ম মেনে ১০ নম্বর ফর্ম পূরণ করতে হবে। যা রেশন দোকান ও খাদ্য দফতরের অফিসে পাওয়া যাবে। এই ফর্ম সাধারণ মানুষকে বিলি করার জন্য রাজ্য জুড়ে বিশেষ শিবিরও খোলা হবে। জানা গিয়েছে, বিডিও অফিস, পুরসভার অফিসেও আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। এই প্রথমবার দারিদ্র্যসীমার উপরে থাকা সমস্ত সচ্ছল পরিবারকে ভর্তুকিহীন ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে
রাজ্যে এখন দুই ধরনের রেশন প্রকল্পের কার্ড আছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় রয়েছে প্রায় ৬ কোটি ১ লক্ষ রেশন গ্রাহক। তিন কোটির কিছু বেশি রেশন গ্রাহক আছেন রাজ্যের দু’টি খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে। কেন্দ্র ও রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট আর্থিক মাপকাঠি আছে। কয়েকটি মাপকাঠি নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, এগুলি যে পরিবারে থাকবে, তারা ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য পাওয়ার রেশন কার্ড পাবে। আবার কয়েকটি মাপকাঠি চিহ্নিত করে বলে দেওয়া হয়েছে, এগুলি থাকলে কার্ড মিলবে না। যেমন সরকারি কর্মী হলে, মাসে ১৫ হাজার টাকার বেশি বেতন, পাকা বড় বাড়ি, গাড়ি সহ কিছু উপকরণ থাকলে সেই পরিবার ভর্তুকির খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার রেশন কার্ড পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে না।
সূত্রের খবর, অনলাইনেও আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে খাদ্য দফতর। দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে, www. wbpds.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে ১০ নম্বর ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া পর্যন্ত গোটাটাই অনলাইনে অর্থাৎ মোবাইলে বা কম্পিউটারে করা যবে। অনলাইনে আবেদনের সময়ে পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ডের ছবি আপলোড করতে হবে। আবেদন করার ৩০ দিনের মধ্যে ডিজিটাল রেশন কার্ডের হার্ড কপি চলে আসবে। বাতিল হয়ে যাবে পুরনো রেশন কার্ডটি।
এবারে রেশনে ভর্তুকিতে পাওয়া খাদ্যসামগ্রী সম্পন্ন মানুষ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলে ‘পুরস্কার’ দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ভর্তুকির খাদ্যসামগ্রী মিলবে না এমন বিশেষ রেশন কার্ড আনতে চলেছে রাজ্য খাদ্য দপ্তর। কিন্তু ওই কার্ড দেখিয়ে নামী সংস্থার শপিং মলে কেনাকাটায় যাতে কিছু বিশেষ ছাড় মেলে সেই উদ্যোগ চলছে। খাদ্য দপ্তর সূত্রের খবর, একটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে। ওই সংস্থা ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলায় রেশন দোকানে কিছু ছাড় দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা ধরনের সামগ্রী সরবরাহ শুরু করেছে। রাজ্যের সব রেশন দোকানে এই ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে চালু হবে। ওই সংস্থা কত শতাংশ ছাড় বিশেষ রেশন কার্ডে দেবে, সেই বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। খাদ্য দপ্তর ৯ শতাংশ হারে ছাড় দেওয়া হোক এটা চাইছে। সংস্থা এখনও পর্যন্ত ৬ শতাংশে রাজি আছে বলে জানা গিয়েছে। সব কিছু চূড়ান্ত হলে খুব তাড়াতাড়ি এব্যাপারে সমঝোতাপত্র সই হবে বলে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা আশা করছেন। আরও কয়েকটি শপিং মল চালানোর সঙ্গে যুক্ত সংস্থার সঙ্গে এই রকম চুক্তি করতে চাইছে খাদ্য দপ্তর। তাদের সঙ্গেও প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।