বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। অবস্থা এমনই যে গাড়িশিল্পের পাশাপাশি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে ভারতের রিয়েল এস্টেট বাজারও। তিন বছর আগে নোটবন্দীর সময় যেন ফের হাজির হয়েছে। এমনই জানাচ্ছে বিভিন্ন সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা। রিয়েল এস্টেট বাজারকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্র ও ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একগুচ্ছ পদক্ষেপ করলেও আগামী ছয় মাসে আবাসন ক্ষেত্রের চিত্রটা নিরাশারই হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিকি, ন্যারেডকো ও নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়ার এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা।
চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতে রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের ‘বর্তমান সেন্টিমেন্ট সূচক’ কমে দাঁড়িয়েছে ৪২, যা আগের দুই ত্রৈমাসিকে ছিল যথাক্রমে ৪৭ ও ৫২। নোটবন্দির সময়ে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ওই সূচক ছিল ৪১। চলতি ক্যালেন্ডার বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ‘ফিউচার সেন্টিমেন্ট সূচক’ সবথেকে কম ৪৯-এ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, সূচক ৫০-এর উপরে থাকলে বাজার সম্পর্কে প্রত্যেকে আশাবাদী বলে ধরা হয়। আর ৫০-এর তলায় চলে গেলেই নিরাশার চিত্র উঠে আসে। নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়া-র চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির বাইজাল বলেন, ‘সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও চাহিদা না বাড়ায় রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সকলেই অত্যন্ত নিরাশার মধ্যে রয়েছে। তবে এই প্রথম আগামী ছয় মাস নিয়ে প্রত্যেকই অত্যন্ত চিন্তিত।
এদিকে সম্পত্তি ব্রোকারেজ সংস্থা প্রপ টাইগার জানিয়েছে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে কলকাতা সহ দেশের প্রধান নয়টি শহরে আবাসন বিক্রি কমেছে ২৫ শতাংশ। আর নয়া আবাসন নির্মাণ কমেছে আরও বেশি- ৪৫ শতাংশ। এর কারণ হিসাবে তারা আবাসন ক্রেতার সেন্টিমেন্টকেই দায়ী করেছে। চলতি মাসেই অ্যানারক ও জেএলএল ইন্ডিয়া তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, ভারতের বড় সাতটি শহরে আবাসন বিক্রি ১৮ শতাংশ কমেছে। প্রপ টাইগার-এর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে কলকাতায় আবাসন বিক্রি হয়েছে ৩,০৮১টি, যা গত বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৪,০৩০। প্রপ টাইগার জানিয়েছে, চলতি অর্থ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মুম্বই, পুণে, নয়ডা, গুরুগ্রাম, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, কলকাতা ও আমেদাবাদে মোট ৬৫,৭৯৯ ইউনিট বিক্রি হয়েছে, যেখানে গত বছরে হয়েছিল ৮৮,০৭৮টি ইউনিট।