আঁচটা ছিলই। এবার তা একেবারে আগুন হয়ে জ্বলে উঠল। অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে নামলেন হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড বা হ্যালের কর্মীরা। সোমবার সকাল থেকে দেশের সাত রাজ্যের ৯টি শাখার সবকটিতেই কাজ বন্ধ করে গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছেন কর্মীরা। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে অল ইন্ডিয়া হ্যাল ট্রেড ইউনিয়ন কোঅর্ডিনেশন কমিটি।
বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের দাবিতে ২০১৭ সাল থেকে ১ জানুয়ারি থেকে সোচ্চার হ্যালের সবস্তরের কর্মীরা। আধিকারিকদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাঁদের বেতনবৃদ্ধির স্কেল ঠিক করা হোক, এই দাবিতে গত ২ বছর সোচ্চার তাঁরা। কিন্তু এই দাবিতে কর্তৃপক্ষ সেভাবে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। দাবি না মানা হলে, কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভে শামিল হবেন, ইউনিয়নের তরফে এই হুঁশিয়ারি পেয়ে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে গত দু’দিন ধরে আলোচনা চলেছে শ্রমিক সংগঠনের সদস্য এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সূর্যদেব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, ‘দু’দিনের আলোচনায় কোনও সুরাহা মেলেনি। কর্মীদের প্রস্তাবিত হারে বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করতে কিছুতেই রাজি নন আধিকারিকরা’।
হ্যালের সিনিয়র টেকনিশিয়ান জয় সরকারের কথায়, ‘ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা নিজেদের বেতন ১৫ থেকে ৩৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে নিয়েছেন। আমাদের দাবি, কর্মচারীদের বেতনও সেই হারেই বৃদ্ধি করা হোক। কিন্তু ওনারা আমাদের ১১ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন, যা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির পথে হেঁটেছি।’
এমনিতেই বেশ খানিকটা লোকসানের মধ্যে দিয়েই এগোচ্ছে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড। তা মাথায় রেখেই কর্মীদের বক্তব্য, নিয়মিত কাজ করেও সংস্থা লাভের মুখ দেখছে না। কাজ বন্ধ রাখলেও তেমন কোনও ক্ষতি হবে বলে তাঁরা মনে করছেন না। কিন্তু কর্মবিরতি করে যদি কর্তৃপক্ষের উপর চাপ তৈরি করে নিজেদের দাবি আদায় হয়, সেটাই তাঁদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হবে বলে মনে করছেন কর্মীরা।