দুজনেই ভারতের জাতীয় দলের অধিনায়ক। তবে একজন ক্রিকেটের, অপরজন ফুটবলের। তাঁরা যথাক্রমে বিরাট কোহলি এবং সুনীল ছেত্রী। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বও যথেষ্ট প্রগাঢ়। একে অপরকে যোগ্য সম্মানই তাঁদের বন্ধুত্বের আসল কারণ। আবার দুজন দুজনকে গুরুত্বপূর্ণ মতামতও দেন। তাই ফিটনেস এবং মাঠে আগের মতোই ক্ষিপ্রতা ধরে রাখতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলির পথই অনুসরণ করলেন বন্ধু সুনীল ছেত্রী। আমিষ খাদ্য ত্যাগ করে তিনি এখন সম্পূর্ণভাবে নিরামিষভোজী।
আগামী মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। তার আগে জাতীয় ফুটবল দলের ৩৪ বছরের অধিনায়ক সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ফিটনেস ধরে রাখতেই তিনি আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তাঁর খাদ্যাভ্যাসে। দেশের হয়ে ৭২টি আন্তর্জাতিক গোলের মালিক বলেছেন, ‘‘এখন আমি সম্পূর্ণ নিরামিষভোজী। অনেক দিন মাংস এবং এবং তৈলজাতীয় খাদ্য বর্জন করেছি। এতে যেমন তরতাজা রয়েছি, তেমনই আমার হজমশক্তিতেও কোনও বিঘ্ন ঘটেনি। বয়স বাড়লেও মাঠে নেমে যাতে বাকিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলতে পারি, সেই কারণে এই পথেই আমাকে এগোতে হয়েছে।’’
ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা জানিয়েছেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে তিনি এটা উপলব্ধি করেছেন, শারীরিক ধকল সামলানোর সঙ্গে দ্রুত চোটমুক্ত হওয়াও খুবই প্রয়োজনীয়। আর তার জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা একান্তই জরুরি। সুনীলের কথায়, ‘‘বয়স বাড়ার সঙ্গে নিজের ভাবনাচিন্তা যেমন পরিণত হয়েছে, তেমনই বেশ কিছু এমন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে যাঁরা জীবনে পরিবর্তন আনতে অনেক ধরনের ইতিবাচক পরামর্শ দিয়েছেন। বিরাটের পরামর্শে আমি নিজেকে অনেকটা পাল্টে ফেলেছি। ওকে দেখেও অনেক কিছু শেখার আছে আমার।”
রাতারাতি আমিষ খাদ্য বর্জন করে নিরামিষ খাদ্য গ্রহণের যৌক্তিকতা কি ছিল? সুনীল বলেছেন, ‘‘আমি যে খাদ্যতালিকা তৈরি করেছি, সেটা নিজের ফিটনেসকে ধরে রাখতেই। দশ বছর আগে যা খেতাম, তার সঙ্গে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘তবে এটাও মনে করার প্রয়োজন নেই যে, দশ বছর আগে আমি ইচ্ছেমতো সমস্ত কিছুই খেতাম। আসলে ধীরে ধীরে নিজেকে সংযমের শৃঙ্খলে বেঁধে এই পরিবর্তনের পথে এগিয়ে গিয়েছি।’’
ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়কের আরও সংযোজন, ‘‘আসলে বয়স কম থাকার সময়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তখন অনেক কিছু খাওয়ার ইচ্ছা হত। অনেক কিছু করার ইচ্ছাও প্রবল ছিল। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে নিজেকে এটাও বুঝতে হবে আমার পক্ষে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়। আমিও সেই অভিজ্ঞতা থেকেই নিজের জীবনে বড়মাপের বদল এনেছি।’’