অনাদায়ী ঋণ বা অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা বয়ে রীতিমতো কাহিল দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি। সরকারি কোষাগার থেকে মূলধন জুগিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে বেসামাল হয়ে পড়ছে কেন্দ্র। এহেন পরিস্থিতিতে ৭৬ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ি ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে ষ্টেট ব্যাংক ও ইন্ডিয়া।
এক আরটিআই মামলার প্রেক্ষিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, গত মার্চের হিসেব অনুযায়ী, শুধু স্টেট ব্যাঙ্কই ২২০ জন ঋণ খেলাপকারীর মোট ৭৬ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ি ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলেছে। ব্যাঙ্কিংয়ের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘রাইট অফ’। যাঁদের প্রত্যেকের ধার ছিল ১০০ কোটি টাকার বেশি। ধারের অঙ্ক ৫০০ কোটি বা তার বেশি, এমন ক্ষেত্রে অনাদায়ি ঘোষণা করেছে ৩৩ জন খেলাপীর ঋণ। যার মোট মূল্য ৩৭,৭০০ কোটি। তথ্যের অধিকার আইনে ওঠা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে গত মার্চ পর্যন্ত ১০০ কোটি ও ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাঙ্কের ‘রাইট অফ’ অঙ্ক জানিয়েছে আরবিআই। তাতে দেখা গিয়েছে মোট ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা অনাদায়ি ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে দিতে হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে। যেখানে খেলাপীর সংখ্যা ৯৮০। এই অ্যাকাউন্টগুলির এক পঞ্চমাংশের বেশি স্টেট ব্যাঙ্কের।
উল্লেখ্য, গত মাসেই দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের দশটি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সংযুক্তিকরণ করা হয়। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মিশে যাচ্ছে। এটি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক বলে অভিহিত হবে। একইসঙ্গে মিশে যাচ্ছে কানাড়া ব্যাঙ্ক ও সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক। পাশাপাশি ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক ও কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের কথাও ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এছাড়াও এলাহাবাদ এবং ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ককেও মিশিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। সংযুক্তিকরণের ফলে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা ২৭ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২।