দিন কয়েক আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে কেন্দ্র করে হওয়া গণ্ডগোলের জেরে গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে রীতিমতো তান্ডব চালিয়েছিল এবিভিপি। সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর শত অনুরোধের পরেও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় যেভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা ঘটনায় নিজেকে ‘জড়িয়েছিলেন’ এবং পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে তুলেছিলেন— তাকে মোটেই ভাল চোখে দেখেনি নবান্ন। সংঘাত বেধেছিল শাসক দলের সঙ্গেও। এবার মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে নৃশংস খুনের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
রাজ্যপাল মন্তব্য করেন, ‘ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে একটা বিবৃতি দেওয়া হল না। নীরবতাই বলে দিচ্ছে তদন্তের গতিপ্রকৃতি।’ এখানেই অবশ্য তিনি থেমে থাকেননি। সেইসঙ্গে যোগ করেছেন, ‘আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদে একটা ভয়ঙ্কর খুন হয়েছে। মানবিকতাকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী ও ৮ বছরের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। অথচ এমন ঘটনার পরও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি রাজ্য প্রশাসন। আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আবেদন করেছি, স্বচ্ছ তদন্ত করুন।’
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এহেন তীর্যক মন্তব্য সামনে আসার পরই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল যে সুনির্দিষ্টভাবে একটি রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করতে বারবার এহেন মন্তব্য করছেন, ঘনিষ্ঠ মহলে তা জানিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এরপরই তৃণমূলের তরফে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বিবৃতি দিয়ে রাজ্যপালকে তাঁর সীমা লঙ্ঘন না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল নিজেই তাঁর সাংবিধানিক সীমা অতিক্রম করে তাঁর পদটিকে অবমাননা করছেন।’
জিয়াগঞ্জে খুনের ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই হয়েছে বলে দাবি করেন পার্থ। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সত্যকে আড়াল করতে রাজ্যপালকে ব্যবহার করছে গেরুয়া বাহিনী। আর ধনকড়ের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, উনি সাংবিধানিক সীমারেখা ভাঙছেন। ওঁর এই মন্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অভিসন্ধিমূলক। তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী তাপস রায়ও বলেন, ‘বেছে বেছে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন রাজ্যপাল। পাঁশকুড়ায় তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় তিনি চুপ। তা নিয়ে কোনও দুঃখপ্রকাশও নেই। সেই ঘটনাগুলি কারা ঘটাচ্ছে, এগুলো জানতে হবে ওঁকে।’