মোদী সরকারের প্রথম ইনিংসেই দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একাধিক প্রতিশ্রুতিই শেষমেশ জুমলাই পরিণত হয়েছে। এবারও ঠিক তাই-ই হল। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রকল্প শুরু হলেও বিন্দুমাত্র এগোয়নি কাজ। ফলে রেলের অব্যবহৃত জমি কাজে লাগিয়ে সারা দেশে ৪০০টি স্টেশন উন্নয়নের জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প যে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে, তা রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনোদ কুমার যাদবকে গত ৭ অক্টোবর লেখা ওই চিঠিতে অমিতাভ জানিয়েছেন, ওই প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার পরে বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও সারা দেশে কোথাও সে ভাবে কাজ এগোয়নি। পরিস্থিতি এমনই যে ওই প্রকল্পকে গতি দিতে অন্তত ৫০টি স্টেশনের কাজ এখনই শুরু করা জরুরি। সে জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের সচিবদের নিয়ে বিশেষ গোষ্ঠী তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পের আওতায় মাত্র দু’টি স্টেশনের কাজ হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর।
ওই চিঠি পাওয়ার পরে রেল বোর্ডের তরফে বৃহস্পতিবার সচিবদের নিয়ে বিশেষ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কমিটিতে নীতি আয়োগের সিইও ছাড়াও রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান, অর্থ দফতরের সচিব, আবাসন ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব এবং রেলের অর্থ কমিশনারকে রাখা হয়েছে। রেল বোর্ডের সদস্য (ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং ট্র্যাফিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের পরে কমিটিতে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। নতুন কমিটি বিভিন্ন স্টেশনের উন্নয়নের কাজে বরাত দেওয়ার নথি চূড়ান্ত করা করা ছাড়াও বরাত দেওয়ার প্রক্রিয়া তদারকি করবে।
রেল সূত্রে খবর, বছর কয়েক আগে পাবলিক-প্রাইভেট-পিপল পার্টিসিপেশন (পিপিপিপি) মোডে দেশে ১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে ৪০০টি স্টেশন ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রেলের পরিকল্পনায় সে ভাবে কেউ আগ্রহ দেখাননি। প্রথম পর্বে আনন্দবিহার, কানপুর, গ্বালিয়র, চণ্ডীগড়, কলকাতা-সহ ২২টি স্টেশনকে নতুন ভাবে গড়ে তোলার কথা ভাবা হয়েছিল। সে জন্য রেলের জমিতে বেসরকারি সংস্থার লিজের মেয়াদ ৪০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৯৯ বছর করে দেওয়া হয়। তাতেও প্রকল্প নিয়ে বিশেষ আগ্রহ চোখে পড়েনি।