ভারত-বাংলাদেশ জলবন্টন চুক্তির ভিত্তিতে নতুন সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশ। ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী সাবরুম এলাকায় নিজেদের ফেনী নদীর জল দেবে বাংলাদেশ। বুধবার ঢাকায় গণভবনে নিজেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে গতমাসে নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তারপরেই পুজোর মধ্যে তিনি ভারত সফরে এসেছিলেন। দেশে ফেরার পর এদিনই তিনি তাঁর সফর নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
এদিন হাসিনা বলেন, কেউ খাবার জল চাইলে তা না দিলে কেমন দেখায়! তিনি জানান, ফেনী নদীর উৎপত্তি খাগড়াছড়িতে। এটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটি নদী। সীমান্তবর্তী নদীতে দুই দেশেরই অধিকার থাকে। ত্রিপুরার সাবরুম এলাকার মানুষ পানের জন্য ভূ-গর্ভের জল তোলে। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশেও। তাই সামান্য জল তাঁদেরও দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, “ভারতের ওই অঞ্চলে পানীয় জল দেওয়ার জন্য দিল্লীর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। যে পরিমাণ জল দেওয়া হচ্ছে, তা অতি নগন্য। কেউ যদি খাওয়ার জল চায়, আর আমরা না দিই এটা কেমন দেখায়! আমাদের তো আরও সীমান্তবর্তী নদী আছে। সেটাও তো আমাদের চিন্তা করতে হবে।”
এছাড়াও ত্রিপুরায় এলপিজি সিলিন্ডার রপ্তানির ব্যাপারেও দিল্লী-ঢাকা চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসিনা। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা যে গ্যাসটা দিচ্ছি তা এলপিজি বা বটল গ্যাস। যা আমরা আমদানি করছি এবং নিজেদের দেশে সরবরাহ করছি, তা থেকেই কিছুটা ত্রিপুরাকে দেওয়া হবে।
আগেই ভারত তিস্তার জলের ভাগ দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তে না পৌঁছানোয় হাসিনা সরকারকে দেশে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এরপরেও সরকার ফেনী নদীর জল ও এলপিজি ভারতকে দেওয়া নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে। এদিন হাসিনা বলেন, ভারতকে গ্যাস দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে বিরোধী দল বিএনপি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার। ২০০১ সালে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রি করার জন্য আমেরিকার কিছু সংস্থা তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ২০০১ সালে আর ক্ষমতায় ফিরতে পারেননি তাঁরা। বিএনপি-জামাত জোট গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ওই বছর ক্ষমতায় এসেছিল।
মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে হাসিনা বলেন, “ত্রিপুরা কিছু চাইলে আমাদের দিতে হবে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে অনেকে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ত্রিপুরার মানুষ তাঁদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। ত্রিপুরা মুক্তিযোদ্ধাদের একটা ঘাঁটি ছিল। ত্রিপুরা বাংলাদেশের জন্য বিরাট একটা শক্তি ছিল। তাঁদের সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক সব আছে, থাকবে।”