বিগত লোকসভা নির্বাচনের শেষদফা ভোটের ঠিক আগেই কলকাতায় বিজেপির রোড শো’কে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কলকাতা ইউনিভার্সিটি ও বিদ্যাসাগর কলেজ ক্যাম্পাস। এমনকি কলেজের ভেতর থাকা বিদ্যাসাগরের মূর্তি পর্যন্ত ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে। এবার ফের সেই শিক্ষাঙ্গনেই সন্ত্রাস চালাল তাঁরা। আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে সন্ধ্যার পর থেকে এবিভিপি ও দুর্গা বাহিনী দাপিয়ে বেড়াল গোটা ক্যাম্পাস চত্ত্বর।
https://www.facebook.com/ekhonkhobor18/videos/889601788074597/
তবে শুধু কি দাপিয়ে বেড়ানো! একদমই না। রীতিমতো ভাঙচুর চালানো হল গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে। মাথায় হেলমেট পড়ে, হাতে লাঠি নিয়ে ভাঙচুর চলল এসএফআইয়ের ইউনিয়ন রুম থেকে শুরু করে অন্যান্য দফতরেও। আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হল সাইকেল, কম্পিউটার-সহ একাধিক জিনিসে। আটকে দেওয়া হল দমকলের গাড়ি। আর গেরুয়া বাহিনীর হাত ধরে ফের কলঙ্গিত হল শিক্ষাঙ্গন।
গেরুয়া পরিহিত এই বহিরাগতরা কারা? মুখে না বললেও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই এবিভিপি ও দুর্গাবাহিনীর সদস্য এবং অতি অবশ্যই বহিরাগত। এমনকী গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে যখন সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাঁরা, তখন পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তিতে জড়ায় সেই দুষ্কৃতীদের দল।
এদিন ইউনিয়ন রুমে শুধু ভাঙচুর চালানোই নয়, রুমের ভেতরে দেওয়ালে আঁকা চে গুয়েভারা’র ছবিতে কালি অবধি লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর আগেও যাদবপুরে লেনিনের মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগ ছিল গেরুয়াপন্থীদের বিরুদ্ধে। ছবি, মূর্তিকে বিকৃত করার রেওয়াজ গেরুয়াপন্থীদের বরাবরের অভ্যেস বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। এদিন তারই পুনরাবৃত্তি হল আবার।
আর এরপরই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আটকে রাখা, আক্রমণাত্মকভাবে প্রতিবাদের ধরণ নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। কিন্তু সেই কাজের পাল্টা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর, আগুন লাগানো যায় কি? এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘিরে যারা বিক্ষোভ দেখাল, তাঁরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, সেটা খুব ভালভাবেই স্পষ্ট। কিন্তু যারা গেরুয়া বসন গায়ে, হেলমেট মাথায় দিয়ে ভাঙচুর চালালো-আগুন জ্বালাল, তাঁরা যে বহিরাগত, সে বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কোনও রকম বিক্ষোভের মুখে বাবুল সুপ্রিয়কে পড়তে হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণ করা হবে, সেটা কি পূর্বপরিকল্পিত ছিল? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।