উত্তর প্রদেশে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে আগেই ধর্ষনের অভিযোগ এনেছিলেন সাহারানপুরের আইন কলেজের ছাত্রী। এবার সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল সিটের সামনে ১৫ ঘণ্টার প্রশ্নোত্তরে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন নির্যাতিতা।
চিন্ময়ানন্দকে এখনও জেরা করা হয়নি। এমনকী এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই রুজু করা হয়নি বলে খবর।
সিট সূত্রে খবর, ১২ পৃষ্ঠার জবানবন্দীতে ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, ৭৩ বছরের চিন্ময়ানন্দের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ ২০১৮ সালের জুন মাসে। তখন তিনি শাহজাহানপুরের সেই কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন। যে কলেজ পরিচালনা করেন চিন্ময়ানন্দ। চিন্ময়ানন্দ তাঁর ফোন নম্বর নেন ও তাঁর ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন। পরে তাঁকে ফোন করে কলেজের লাইব্রেরিতে ৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রস্তাব দেন। তিনি সেই চাকরি করতে শুরু করেন। কারণ তাঁর পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র।
তারপর অক্টোবরে ওই ছাত্রীকে হোস্টেলে চলে আসার জন্য বলেন চিন্ময়ানন্দ। পরে তাঁকে আশ্রমে আসার আহ্বান জানান। এরপরই হোস্টেলের বাথরুমে ছাত্রীর স্নানের ভিডিও তাঁকে দেখিয়ে চিন্ময়ানন্দ হুমকি দেন ভাইরাল করে দেওয়ার। এই ভয় দেখিয়ে তিনি ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও তুলে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করেন চিন্ময়ানন্দ। এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছেন বিজেপি’র এই নেতা বলে অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের নির্যাতিতা ছাত্রীর। এমনকী তাঁকে দিয়ে ওই নেতাকে ম্যাসেজও করানো হয়। বন্দুক তাক করে ভয় দেখিয়ে এসব করানো হয়।
বিষয়টি সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে নির্যাতিতা ছাত্রী সিদ্ধান্ত নেন তিনিও ভিডিও তুলে রাখবেন চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে। আর আগস্ট মাসে একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি কলেজ থেকে পালিয়ে যান। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাবা ফেসবুকে ওই পোস্ট দেখেন। তাঁর মেয়ে ও আরও অনেক মেয়েকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ আনেন তিনি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রথমে নিখোঁজ ছাত্রীর অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেননি। তিন দিন পরে নিখোঁজ ডায়েরি লেখার পাশাপাশি অপহরণের অভিযোগও দায়ের হয়। কিন্তু কোনও এফআইআর করা হয়নি।
এক সপ্তাহ পরে ওই নির্যাতিতাকে রাজস্থানে পাওয়া যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মেয়েটিকে আদালতে হাজির করা হয়। তখন রুদ্ধদ্বার শুনানিতে তরুণীর সব অভিযোগ শোনে শীর্ষ আদালত। যদিও চিন্ময়ানন্দ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।