ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে স্কোয়াডে থাকলেও প্রথম ১১ তে তাঁর জায়গা হয়নি। বরং উইকেটের পেছনে জায়গা পেয়েছিলেন তরুণ ঋষভ পন্থ। তা বলে ঋদ্ধির ক্রিকেটজীবন যে থেমে যাচ্ছে, এমনটা ভাবার কোনো দরকার নেই। বরং দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে উইকেটের পিছনে পুরনো জায়গা ফিরে পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে তাঁরই।
কাকতালীয় হতে পারে, কিন্তু এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই চোট পেয়ে দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে কেপ টাউনে শেষ বার তিনি ভারতের হয়ে খেলেছিলেন। এমনই খারাপ কপাল যে, চোট পেয়ে বাইরে থাকতে হয় আঠেরো মাস এবং সেই সময়েই উত্থান ঘটে ঋষভ পন্থের। তরুণ এই প্রতিভার কিপিং মান নিয়ে যতই তর্ক-বিতর্ক চলুক, আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে অনেকেই বলতে শুরু করেন, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির উত্তরসূরি পেয়ে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট! ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সেঞ্চুরি করে ঋষভ সেই সব কথাবার্তাকে আরও গতি পাইয়ে দেন।
ভিভ রিচার্ডসের দেশে দুই টেস্টের তিন ইনিংসে বাঁ হাতি ঋষভ মাত্র ৫৮ রান করার পরে তাঁকে নিয়ে রাতারাতি স্বপ্নভঙ্গ হয়ে গেল, এমনটাও বলা উচিত নয়। তবে সামান্য হলেও খটকা তৈরি হয়েছে যে, টেস্ট ক্রিকেটে তিনিই সেরা লোক কি না। এখনও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনিই হয়তো প্রথম পছন্দ। বিশ্বকাপ পরবর্তী অধ্যায়ে ধোনির পরিবর্ত হিসেবে তাঁকেই ভাবা হচ্ছিল এবং এখনও দল পরিচালন সমিতির সেই ভাবনায় পরিবর্তন হচ্ছে না। একই সঙ্গে অনেকের মাথায় ঘুরছে, ঋষভের কিপিং দুর্বলতার কথাও। যা চোখে পড়েছে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজেও।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে তা-ও হয়তো উইকেটের পিছনে কিপারের দুর্বলতা ততটা প্রকট হয়ে দেখা দেয়নি। যশপ্রীত বুমরা এবং বোলাররা দুরন্ত ফর্মে ছিলেন বলে অনেক খামতিই ঢাকা পড়ে গিয়েছে অন্যদের। তবে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজ হবে ঘূর্ণি পিচে। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে একটিও টেস্ট না-খেলা অশ্বিন এবং জাডেজাকে উইকেটের সামনে দাঁড়িয়ে সারা দিন ধরে ‘কিপ’ করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। ব্যাটিংয়ের চেয়েও উইকেটকিপারের কাছে বেশি করে চাওয়া হবে কিপিং দক্ষতা।
এই যুক্তিতেই ঋষভকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলে দিতে চলেছেন বাংলার ঋদ্ধিমান। তাঁর কিপিং দক্ষতা নিয়ে কারও মনে কোনও সংশয় নেই। দলের অন্দরমহলে অনেকে বরং বিশ্বাস করেন, ঋদ্ধি শুধু ভারতের নয়, বিশ্বের সেরা উইকেটকিপার। উড়ে গিয়ে তাঁর সেই স্লিপ কর্ডন থেকে ক্যাচ তুলে নেওয়া দেখে নামকরণই হয়ে গিয়েছেন ‘সুপারম্যান ঋদ্ধিমান’। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ক্রিকেট ভক্তরা সেই দৃশ্য ফের দেখার সুযোগ পেতেই পারেন ঘরের মাঠে আসন্ন সিরিজে।