সাম্প্রতিক কালে দেশের বহুত্ববাদী গণতন্ত্রের মূল ভিত্তির সঙ্গে আপোষ করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে সরকারি আমলা হিসেবে কাজ করে যাওয়া অনৈতিক- এবার এই যুক্তিতে পদত্যাগ করলেন আরও এক আমলা। এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে দু’জনের পদত্যাগ।শুক্রবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বছর চল্লিশের আইএএস অফিসার এস শশীকান্ত সেন্থিল। তামিলনাড়ুর ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক সেন্থিল ২০০৯ ব্যাচের আইএএস অফিসার। দু’বছর ধরে দক্ষিণ কান্নাড় জেলার ডেপুটি কমিশনার হিসেবে কর্মরত তিনি।
পদত্যাগপত্রে সেন্থিলের বক্তব্য, ‘বৈচিত্র্যমূলক গণতান্ত্রিক গঠনের মূল ভিত্তির সঙ্গে যে ভাবে আপোষ করা হচ্ছে, তা আগে কখনও হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সরকারি আমলা হিসেবে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার কাছে অনৈতিক, তাই এই সিদ্ধান্ত। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আসন্ন দিনে দেশের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। আগের মতো পরিস্থিতি আর থাকবে না। সেই প্রেক্ষাপটে আইএএস পদ দূরে সরিয়ে রেখে আমি কাজ চালিয়ে যেতে চাই, যাতে অন্যদের জীবন ভালো হয়।’
আমলার কাজ মাঝপথে ছেড়ে যাওয়ার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনাও করেছেন তিনি। সেন্থিলের দাবি, তাঁর চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত একেবারেই ব্যক্তিগত। কোনও ব্যক্তি বা ঘটনার সঙ্গে এর সংযোগ নেই। উল্লেখ্য, গত ২১ অগস্ট আরও এক আইএএস অফিসার কান্নান গোপীনাথন দাদরা ও নগর হাভেলি প্রশাসনের দায়িত্ব ছাড়েন। ৩৩ বছরের ওই আমলা জানিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরকে যে ভাবে নিরাপত্তা ঘেরাটোপে মুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদে পদ ছাড়ছেন তিনি।
তাঁর প্রতিবাদপত্রে লেখা ছিল, ‘জীবন ও স্বাধীনতা পাশাপাশি চলে, এটাই সাংবিধানিক গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। কেউ যদি বলে আপনার জীবন বাঁচানোর জন্য জেলে পুরে রাখবে, মেনে নেবেন? জম্মু-কাশ্মীরে এটাই চলছে ৩ মাস ধরে। আমি জানি আমার পদত্যাগে কিছু বদলাবে না, কিন্তু কিছুক্ষেত্রে বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।’ এর আগে গত জানুয়ারিতে চাকরি ছেড়েছিলেন ২০০৯ ব্যাচের আইএএস অফিসার শাহ ফয়জলও। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যার প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানাধিকারী প্রথম কাশ্মীরি ফয়জল।