ফেসবুকে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ নতুন কিছু নয়৷ এর আগেও একাধিকবার নানা ভাবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার মত গুরুতর ঘটনা ঘটেছিল মার্ক জুকারবার্গের অধীনস্থ ফেসবুকের সঙ্গে৷ এবার ফের সেই একই ঘটনা ঘটল৷ ফাঁস হল প্রায় ৪২ কোটি মানুষের ফোন নম্বর৷
আমেরিকার প্রযুক্তি বিষয়ক বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম ‘টেক ক্রাঞ্চ’ জানিয়েছে অনলাইনে ফাঁস হয়ে গিয়েছে বিপুল সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর। এমনকি এই অভিযোগ মেনে নিয়েছে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থাটি।
সূত্রের খবর, এই ৪২ কোটির মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি অ্যাকাউন্ট আমেরিকার ব্যবহারকারীদের, ৫ কোটি ভিয়েতনামর এবং ব্রিটেনের প্রায় ২ কোটি। বাকি অ্যাকাউন্টগুলি অন্য দেশের বলে সূত্রের খবর৷ ঘটনা জানাজানি হতেই চিন্তায় এই সমস্ত দেশের গ্রাহকেরা৷ উল্লেখ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা-কাণ্ডের সময় থেকেই ফেসবুকের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠছে। অভিযোগ, ফেসবুক থেকে তথ্য হাতিয়েই মার্কিন ভোটে হস্তক্ষেপ করছিল মস্কো।
কিন্তু এই বিশাল সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর ফাঁস হল কি করে?উত্তরে ‘টেক ক্রাঞ্চ’ বলেছে, ফেসবুক তাদের গ্রাহকদের ফোন নম্বর যে সার্ভারে মজুত রাখে, তা চরম অসুরক্ষিত। ফলে সেই সার্ভারের পাসওয়ার্ড খুব সহজেই হ্যাক করা যায়। এবং এ ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।
এহেন গুরুতর অভিযোগ স্বীকার করে এই ফাঁক থাকার কথা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে৷তবে দায় এড়াতে সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, ওই ডেটাবেসে একই নম্বর একাধিক বার ছিল। তাই সংখ্যাটা এত বিপুল মনে হচ্ছে। আদতে তা ২০ কোটির বেশি নয় বলেই দাবি এই সোশ্যাল মিডিয়ার।
কিন্তু ২০ কোটি, এই সংখ্যাটা কি যথেষ্ট নয়? আর এই ২০ কোটিই বা ফাঁস হবে কেন? এই ফোন নম্বর ফাঁসের ঘটনাটির সঙ্গে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কান্ডের যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ যখন ফোন নম্বর গিয়ে আইডি খোঁজার ফিচার ছিল ফেসবুকে। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নিয়ে ২০১৮-র মার্চে জলঘোলা শুরুর পরের মাসেই এই ফিচার তুলে নেয় ফেসবুক। তাদের দাবি, এই ফিচার কাজে লাগিয়েই ডেটাবেস থেকে ফোন নম্বর সরানো হয়েছিল। সেই সব নম্বরের বেশির ভাগের এখন অস্তিত্ব নেই বলেও দাবি ফেসবুকের। তবু অস্বস্তি কাটছে না ফেসবুকের। এক জনের ফোন নম্বর বেহাত হয়ে গেলে কী ভাবে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ নানাবিধ অ্যাকাউন্ট বেহাত হয়ে যেতে পারে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।