সমস্ত মানুষদের জন্য সমান অধিকার রয়েছে। সব ধর্মের সমস্ত শ্রেণীর জন্য মন্দির, হাসপাতাল, স্কুলে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে শুধুমাত্র দলিতদের ক্ষেত্রেই কেন মৃতদেহ দাহ করার জন্য আলাদা শ্মশানঘাট হবে। এর আগে তামিলনাড়ু সরকারের কাছে এই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা চেয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। এবার অন্য একটি ইস্যুতেও এক যুগান্তকারী রায় দিল তারা। সমাজ সংস্কারক পেরিয়ার ই ভি রামস্বামীর অনুগত এবং দ্রাবিদার কাজহাগাম-এর সদস্যদের সম্পূর্ণ মৌলিক অধিকার রয়েছে ঈশ্বর এবং ধর্মের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার। ঠিক যেমন অন্যদের অধিকার আছে ঈশ্বর বিশ্বাসে। রায়ে এমনটাই জানিয়েছে বিচারপতি এস মণিকুমার ও সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সমাজ সংস্কারক পেরিয়ার ই ভি রামস্বামী জীবিত থাকাকালীন ত্রিচিতে উন্মোচিত হয় তাঁর একটি মূর্তি। যার উদ্বোধন করেছিলেন তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী সি এন আন্নাদুরাই। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে কামরাজও। তাঁর সেই মূর্তির নিচে লেখা হয়েছিল, ‘ঈশ্বর বলে কেউ নেই… ঈশ্বরের কোনও অস্তিত্বই নেই। যে ঈশ্বরের জন্ম দিয়েছে সে ভীষণই বোকা। যে ঈশ্বরের প্রচার করেছে সে দুষ্ট এবং যে ঈশ্বরের আরাধনা করে সে বর্বর, আদিম।’ এই নিয়েই মামলা করেছিলেন এম দেইভানয়াগম। তাঁর দাবি ছিল, এই ধরনের আক্রমণাত্বক এবং আপত্তিকর মন্তব্য পেরিয়ার কোনওদিনও করেননি। তাঁর মৃত্যুর পর এই সব কথা লেখা হয়েছিল মূর্তির নিচে।
তবে দ্রাবিদার কাজহাগাম-এর সভাপতি তাঁর বিরোধিতা করে বলেছিলেন, ‘থানথাই পেরিয়ার আগে থেকেই বুঝেছিলেন, তাঁর মূর্তির নিচে এই কথাগুলি লেখা না হলে কিছু বছর পর তাঁকেই ঈশ্বর জ্ঞানে মানুষ পুজো করা শুরু করবে। সেই জন্যেই এই কথাগুলি তিনি বলে গিয়েছিলেন।’ আর এবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দানের সময় বলে, ‘মামলাকারীর যদি অধিকার থাকে ভারতীয় সংবিধানের ১৯ ধারা অনুযায়ী ঈশ্বরের অস্তিত্ব এবং ধর্ম সম্পর্কে নিজের মত প্রকাশের, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের লালাই সিং যাদব মামলার উদাহরণ তুলে আমরাও বলছি পেরিয়ার ই ভি রামস্বামীর অনুগত এবং দ্রাবিদার কাজহাগাম-এর সদস্যদেরও ভারতীয় সংবিধান সম্পূর্ণ অধিকার দিয়েছে ঈশ্বরকে অস্বীকার করার।’