হরিয়ানার হিসার জেলায় রাখিগড়ি অঞ্চলে হরপ্পা সভ্যতার আমলের নগরীর সন্ধান মিলেছে কয়েক বছর আগে। হরপ্পার সভ্যতা যখন উন্নত হচ্ছে, তখনই রাখিগড়িতে গড়ে ওঠে প্রাচীন নগর। তার একদিকে ঘাগার ও অন্যদিকে হাকরা নদী। দুই নদীর মাঝখানে ২৭ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে আছে সাতটি স্তূপ। তাতে প্রাচীন সভ্যতার যে নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে, তাতে বোঝা যায়, ৬৫০০ বছর আগে সেখানে জনবসতি ছিল।
ধ্বংসস্তূপে মধ্যে পাওয়া গিয়েছে কয়েকটি কঙ্কাল। তারা সাড়ে চার হাজার বছর আগে বেঁচে ছিল। এখন প্রশ্ন কোন জাতির লোক ছিল এরা,এদের ই কি আর্য বলা হয়, আর্য রাই কি বসতি তৈরি করেছিল রাখিগড়িতে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য একটি কঙ্কালের ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছিল।
ইতিহাসবিদরা মনে করেন, অতীতে মধ্য এশিয়ার স্তেপভূমি থেকে পশুপালকের দল ছড়িয়ে পড়েছিল এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে। ওই পশুপালক জনগোষ্ঠীকেই বলা হয় আর্য। কিন্তু রাখিগড়িতে পাওয়া কঙ্কালগুলির জিন পরীক্ষা করে এমন কিছু পাওয়া যায়নি যাতে বলা যায়, তারা পশুপালক জনগোষ্ঠীর লোক ছিল।
অনেকের ধারণা আর্যরা প্রথমে বাসস্থান স্থাপন করেছিলো ইরানে। পরে তাদের একটি অংশ ভারতে চলে আসে। কিন্তু রাখিগড়ির কঙ্কালের জিনে এমন কিছু পাওয়া যায়নি যাতে বলা যায়, তারা ইরান থেকে আসা আর্যদের বংশধর ছিল।
রাখিগড়িতে পাওয়া সভ্যতার নিদর্শন নিয়ে গবেষণা করেছেন পুরাতত্ত্ববিদ বসন্ত সিন্ধে, তিনি কঙ্কালের জিন পরীক্ষার সম্পর্কে বলেন, সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে গৌরবের দিনগুলিতে ওই অঞ্চলে নগর গড়ে উঠেছিল। সেখানে পাওয়া একটি কঙ্কালের ডিএনএ টেস্ট করে দেখা গিয়েছে, তারা স্তেপের পশুপালকদের বংশধর নয়। এমনকী ইরানীয় আর্যদের বংশধরও নয়। বরং ভারতের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের জিনের মিল আছে।
অনেকের ধারণা ইরানীয় আর্যরা ভারতে এসে স্থানীয় মানুষকে কৃষিকাজ শিখিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, ইরান থেকে প্রাচীনকালে ভারতে আর্যরা আসেনি । কঙ্কালের ডিএনএ টেস্টে এমনই অনেক চালু ধারণা বদলে যেতে বসেছে।