বাড়ি ভেঙে পড়ার আতঙ্ক অব্যাহত বউবাজারে। বুধবার সকালেও স্যাঁকরা পাড়ার একটি দোতালা বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ে। ঘটনার পর দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাঁকরা পাড়া দিয়ে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো চোখ রাঙাচ্ছে আবহাওয়া। ভারী বর্ষণ হলে আরও বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বউবাজারে মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গে ধস পরীক্ষা করতে এবার বিদেশ থেকে উড়িয়ে আনা হল তিন বিশেষজ্ঞকে। মঙ্গলবার রাতেই তাঁরা কলকাতায় এসে পৌঁছান। এদের মধ্যে দুজন মাটি বিশেষজ্ঞ এবং অন্যজন সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ।
হংকং থেকে এসেছেন জন এনরিকর্দ। ইনি মাটি বিশেষজ্ঞ। আরও এক মাটি বিশেষজ্ঞ এসেছেন বউবাজারের মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গ পরীক্ষা করতে। তিনি হলেন ডা. পিছুমনি। ইনি আইআইটির আমন্ত্রিত লেকচারারা। এসেছেন সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ জে ব্রিজ ক্রিস্টোফার হল। সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। এদের সঙ্গে রয়েছেন মেট্রো রেলের বিশেষজ্ঞরা।
ওই তিন বিশেষজ্ঞ ধসে যাওয়া সুড়ঙ্গ ও এলাকা ঘুরে দেখেছেন। পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, টানেল খোঁড়ার আগে সেখানে বিভিন্ন ভাবে মাটি-সহ অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। তার পরেও কেন এই ধস নামল। আগামীদিন ফাটলধরা বাড়িগুলিকে নিয়ে কী করা যায় তা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে মোট ১১টি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। টানেলের মাটি কী অবস্থায় রয়েছে তা পরীক্ষা করে কেএমআরসিএলকে জানাবেন তাঁরা।
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে বাড়ি থেকে নিজেদের মূল্যবান জিনিসপত্র বের করছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের লম্বা লাইন পড়েছে দূর্গা পিতুরি লেনে। পুলিস, পুরকর্মীদের নিয়ে তারা ভেতরে গিয়ে জিনিসপত্র বের করেন আনেন।
গতকালও বউবাজার এলাকায় বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। ১৩এ দুর্গা পিতুরি লেনের তিন তলা সাজানো একটি বাড়ি মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। একতলার কলাপসিবল গেটটি শুধু অক্ষত ছিল। আর গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়ে সরু রাস্তার উপর। ইট, কাঠ, বিমের ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুমাত্র সেখানে অবশিষ্ট ছিল না। সংকীর্ণ গলিতে শুধু পড়ে থাকে স্মৃতি। গোটা এলাকাটাই যেন মৃত্যুফাঁদ। বাসিন্দাদের গ্রাস করেছে আতঙ্ক।