দ্বিতীয় মোদী সরকারের বাজেট পেশের পরই বসে গিয়েছিল গাড়ি ব্যবসার চাকা। গাড়ি বিক্রিতে ধস নামার ফলে বিপাকে পড়ে যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিও। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে, এপ্রিল মাস থেকে ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। আগামী দিনে আরও ১০ লক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা করছে গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থাগুলি। এরইমধ্যে গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম জুলাইয়ের যে বিক্রির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছে অর্থনীতির শিরদাঁড়ায়। দেখা গেছে, গত মাসে দেশের মধ্যে গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমার হার দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’দশকের মধ্যে সব চেয়ে বেশি। এমনই তীব্র মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে এবার গাড়ি উৎপাদন বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করল হুন্ডাই মোটরস (এইচএমআইএল)। তাদের চেন্নাই প্ল্যান্টে উৎপাদন আপাতত বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই গাড়ি নির্মাতা সংস্থাটি। বর্তমান বাজারের অবস্থার কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ করেছে তারা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের বাজারে ‘ভেন্যু’ এবং ‘গ্রান্ড আই টেন নিওস’ লঞ্চ করেছে হুন্ডাই। এই গাড়ি দু’টি বাজারে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। তবে ভারতীয় গাড়ি বাজারের সামগ্রিক মন্দার স্রোতের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কোরিয়ার এই গাড়ি সংস্থাটি। যে কারণে চেন্নাই কারখানার সমস্ত বিভাগে ছুটি ঘোষণা করেছে তারা। অর্থাৎ এই সমস্ত বিভাগে নতুন কোনও উৎপাদন হবে না। বাজার মন্দা যাওয়ায় এর আগে মারুতি, অশোক লেল্যান্ড, টাটা মোটরস, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা-সহ বিভিন্ন সংস্থা নতুন গাড়ি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। যার জেরে বেশ কিছু সংস্থায় কর্মী ছাঁটাইও চলছে। দেশের বৃহত্তম গাড়ি উত্পাদন সংস্থা টাটা মোটর্সও তিন দিন তাদের পুণে ও জামশদেপুরের কারখানায় উত্পাদন বন্ধ রেখেছিল। গাড়ির চাহিদা উল্লেখজনক ভাবে কমে যাওয়াতেই যে সেই সিদ্ধান্ত, তাও জানানো হয়েছিল টাটা মোটর্সের তরফে। ‘আচ্ছে দিনে’ গাড়ি ব্যবসার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার পিছনে মোদীর নেওয়া জিএসটি নীতিকেই দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।