পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মমতার তৃণমূল ও বিজয়নের সিপিএম একে অপরের বিরুদ্ধে যুযুধান হলেও কেজরিওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে এক সুরে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে একই অবস্থান নেই। কিন্তু সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড বিজয়নের এভাবে মমতার পাশে বসে সওয়াল করাই শুধু নয়, বাইজলকে পাঠানো চিঠিতে এক সঙ্গে সই করে দাবি জানানোর পদক্ষেপ নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে। কিন্তু চর্চা চললেও তাদের কোনও ওজর আপত্তি যে এনিয়ে তেমন আমল দেবে না পলিটব্যুরো সেটা ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন অলিমুদ্দিনের মাতব্বরেরা।
বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিরিখে বিজয়নের যৌথ প্রতিবাদী ভূমিকা সঠিক ছিল বলেই পলিটব্যুরো মনে করেছে।
বিমান-সূর্যরা যাকে সবথেকে বেশি ভরসা করেন, সেই সীতারাম ইয়েচুরিও এই ইস্যুতে বিজয়নের ভূমিকা সমালোচনামূলক বলে মনে করেননি।
ফলে রাজ্য সিপিএমের অস্বস্তি কমার বদলে দ্বিগুন বেড়ে গেছে।
উলেখ্য, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বিজয়ন মমতার ঠিক পাশেই বসে ছিলেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর এহেন অবস্থান নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয় বঙ্গ ব্রিগেডের নেতাদের মধ্যে। একাধিক নেতা কর্মী দিল্লীতে একেজি ভবনের কর্তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চান। একাধিক ফোন পান ইয়েচুরিও।
পলিটব্যুরোর দুই দিল্লী নিবাসী বাঙালী তালেবর নিলোৎপল বসু ও হান্নান মোল্লাও একেজি ভবনের নেতাদের পোঁ এর দল হিসাবেই ভূমিকা পালন করেন।
নিলোৎপল ও হান্নানের এই আচরণে অলিমুদ্দিন চূড়ান্ত বিরক্ত। দিল্লী নিবাসী বাক্যাবাগীশ তাত্ত্বিক নিলোৎপল এবং একেজির নেতাদের তল্পিবাহক হান্নানকে বাংলার গ্রামে কাজ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক- এ টিপ্পনী করতে ছাড়েননি অলিমুদ্দিনের এক তাবড় নেতা।
পলিটব্যুরো সদস্যরা মনে করছেন বিজেপি বিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্রে মমতা, চন্দ্রবাবু বা কুমারস্বামীদের সঙ্গে সিপিএমও যে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়, যৌথ উদ্যোগে শামিল হয়ে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী অন্তত সেটা বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বিজয়নের ভূমিকা নিয়ে কোনোরকম প্রশ্ন তোলা যাবে না পরিষ্কার জানিয়েছে পলিটব্যুরো। পলিটব্যুরোর এই অবস্থানে চরম বেকাদাই পরে গেছে অলিমুদ্দিন।