একটানা ৩৮ দিন ধরে চলা ১৭ তম লোকসভার প্রথম অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে প্রায় রোজই কোনও না কোনও বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদী সরকার। তবে সংসদে বিল পাশ আটকাতে না পারলেও এবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘন ইস্যুতে সরব হবে বলেই ঠিক করেছে তৃণমূল।
দলের উদ্দেশ্যে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সংসদে যে ক’টি বিলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তা নিয়ে সরব হতে হবে। রাজ্যের অধিকারে কোনও ভাবেই কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া যায় না। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তৃণমূল বিজেপি বিরোধী দল ঠিকই। তবে সংসদে অহেতুক কোনও বিরোধীতার পক্ষে না গিয়ে গঠনমূলক যে বিরোধী ভূমিকা পালন করেছে, আগামীদিনেও তা করবে।
ঠিক হয়েছে, সংসদের অধিবেশন চলাকালীন যেভাবে উভয়কক্ষেই দল সরব হয়েছিল, একইভাবে সংসদের বাইরেও প্রশ্ন তোলা হবে, কেন কোনওরকম স্ক্রুটিনি না করে একের পর এক বিল পাশ করানো হল? ১৭ জুন থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত একটানা সংসদের অধিবেশন চললেও কেন সংসদীয় কমিটি গঠন করে তার কোনও বৈঠক হল না? বিল পেশের ক্ষেত্রে সংসদীয় নিয়মকে কেন বুড়ো আঙুল দেখানো হল? কেনই বা এখনও নির্বাচন হল না লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের?
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনকে বলেছেন, উল্লেখিত বিষয়গুলি নিয়ে সরব হতে। সেই মতো ডেরেক বলেন, সংখ্যার জোরে মোদী সরকার সংসদে বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপ মোটেই মেনে নেব না। তিনি বলেন, ইউএপিএ, এনআইএ, আরটিআই, মোটর ভেহিকেলস, ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিলের মতো একগুচ্ছ বিলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।
তাঁর কটাক্ষ, সংসদীয় সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে সরকারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে, কিন্তু সাহস থাকলে সরকার বলুক কীভাবে বুলডোজ করে সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে কোনওরকম সংসদীয় কমিটিতে বিল না পাঠিয়ে তা পাশ করা হয়েছে। তৃণমূল যে তথ্য সামনে এনেছে, তাতে সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে ৩৮ দিনে ৩০ টি বিল পাশ করেছে সরকার।
অন্যদিকে, তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো সংসদে তাঁরা গঠনমূলক বিরোধী হিসেবে সবচেয়ে ভালো কাজ করেছে। দলের পক্ষ থেকে ৮৪ জন সাংসদ বিলের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। জিরো আওয়ারে উল্লেখযোগ্য বিষয় তুলে ধরে সরকার ও সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ৭৪ জন সাংসদ। তাই কোনও ভাবেই কেউ এই অভিযোগ করতে পারবে না যে, সংসদে তৃণমূল চুপ করে সব মেনে নিয়েছে।