তৃণমূল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমার্থক। তৃণমূলের সভায় এখনও ‘ক্রাউডপুলার’ দলনেত্রী। তাঁর এক ডাকেই বাংলার সব প্রান্ত ছুটে আসেন কর্মী-সমর্থকরা। শুধু আজ নয়, নয়ের দশকে যুব কংগ্রেস নেত্রী থাকাকালীনও একার দমে ব্রিগেড ভরাতে পারতেন মমতা। এই ব্র্যান্ড মমতাকে ঘষামাজা করেই তৃণমূলের তরফে খোলা হয়েছে ‘আমার গর্ব মমতা’ নামের একটি পেজ। যেখানে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে রাজ্য সরকারের সমস্ত প্রকল্প ও কাজকে। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে মানুষের কেন ভাল লাগে সেকথা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে ‘আমার গর্ব মমতা’ পেজটি খোলা হয়েছিল গত ১৫ জুলাই। তবে চলতি মাসের গোড়ায় তা নতুন কলেবরে প্রকাশ্যে আসে। ওই পেজে আম জনতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কেন গর্ববোধ করেন? ইতিমধ্যে বহু মানুষ তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। কেউ বিধবা ভাতা পেয়ে সুগারের নিয়মিত ওষুধ কিনতে পারছেন মাসে মাসে। কোথাও আবার রাজবংশী পরিবারের শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোরী নিখরচায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। এভাবেই সকলে সবিস্তারে লিখেছেন বা বলেছেন মমতা-দিদির নামে গর্বের কারণ। এমনই নানা প্রাপ্তির কাহিনীতে ভরে উঠেছে ‘আমার গর্ব মমতা’ নামের ফেসবুক পেজ।
ভিডিও ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই তাঁদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মমতার প্রতি। যেমন পানিহাটির বাসিন্দা সাবিত্রী দেবী। তিনি বলেন, ‘আমি সুগারের রোগী। আগে ওষুধ কিনতে পারতাম না। বিধবা ভাতার জন্যই এখন ওষুধ কিনতে পারছি এবং চিকিৎসা করাতে পারছি। এইজন্য মমতা দিদিকে অশেষ ধন্যবাদ। তাঁর কাছে আমি বিশেষ ভাবে উপকৃত। উনি সরকারে আসার আগে আমি বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা কিছুই পেতাম না।’ আবার জনৈক সুকান্ত পাল লিখেছেন, ‘দিদির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলার ঘরে ঘরে প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। একটার পর একটা প্রকল্পে তিনি বাংলা এবং বাংলার মানুষকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। আমাদের গর্ব দিদি।’
প্রায় একই সুরে গৃহবধূ ইন্দ্রাণী চন্দ মন্তব্য করেছেন, ‘আমার গর্ব আমাদের দিদি। দিদির মতো করে বাংলার জন্য কেউ ভাবেনি। যে কাজ করে না তার সমালোচনাও হয় না। দিদির হয়, কারণ উনি কাজ করেন।’ আবার জনৈক পিনাকী সমাদ্দার তাঁর ভিডিও জবানিতে মন্তব্য করেছেন, ‘আগে টিমটিমে বাল্বের আলোয় বসে থাকতাম। এখন পাড়ায় হাইমাস্ট। রাস্তাটাও ভালো। প্রবল গরমেও লোডশেডিং নেই। দিব্যি আছি। এই তো সে দিন দেখলাম পাড়ায় এক অসুস্থ বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে ছেলেরা ছুটোছুটি করছে। বেসরকারি হাসপাতালে অনেক টাকার প্যাকেজ। শেষ পর্যন্ত ‘দিদিকে বলো’ ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করার পর আরজি কর হাসপাতালে বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে গেল। এর পরেও দিদির জন্য গর্ব হবে না?’
‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের কিশোরী মলিনা রাজবংশী অভাব এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয়ের সংকল্প করেছে। দু’হাতে লাঠিতে ভর করে কোনওক্রমে দাঁড়িয়ে মলিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কম্পিউটার শিখতে এসেছি। কম্পিউটার শিখে আমি কিছু করতে চাই। মমতা দিদির জন্যই এখানে বিনা পয়সায় কম্পিউটার, সেলাই শেখানো হচ্ছে। মমতা দিদির জন্যই আমরা অনেক কিছু শিখতে-জানতে পারছি।’ উল্লেখ্য, যে ভিডিওগুলি আপলোড করা হয়েছে তার দর্শকও প্রচুর। এই সকল অভিজ্ঞতা আদতে ‘দিদিকে বলো’রই পরিপূরক। এভাবে উপকৃত আম নাগরিকদের বয়ানেই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ‘দিদি’র সাফল্য।