লোকসভায় তিন তালাক বিল পাশ হওয়ার পরই এর তীব্র বিরোধিতা করলেন প্রবীণ এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়াইসি। এদিন লোকসভায় বিল পাশ হওয়ার পর ওয়াইসি বলেন, “এমন আইন এনে মুসলিম মহিলাদের উপরে অত্যাচার করছে মোদী সরকার। এরপর কেউ পুরুষের বিরুদ্ধে প্রমাণ দেবে না। গ্রেফতার করলে খোরপোষ দিতে পারবেন না স্বামী। তিন বছর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে হবে স্ত্রীকে।”
আসাউদ্দিনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা বক্তব্য রাখেন বিজেপি সাংসদ পুনম মহাজন। তাঁর কথায়, “এদেশে বিবাহ পবিত্র সংস্কার। সেটা যে ধর্ম বা জাতই হোক না। সময়ের সঙ্গে সমাজ বদলে যাচ্ছে। ধর্মেও আনতে হবে।” এর বিরোধিতা করে সনাতনী সংস্কৃতির বিয়ের সঙ্গে ইসলামের বিবাহের ফারাক রয়েছে বলে মনে করিয়ে দেন আসাউদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘ইসলামে বিয়ে জন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক নয়। এটাকে তেমন বানানোর চেষ্টা করবেন না। বরং বিবাহ একটা জন্মের চুক্তি।” এদিন আসাউদ্দিন ওয়াইসি আরও বলেন, “সরকারের মন্ত্রীর উপরে যখন মিটু-র অভিযোগ উঠেছিল, তখন কোথায় ছিল। ২৩ লক্ষ হিন্দু বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলার জন্য সরকার কিছুই করছে না।”
অন্যান্য দলের বিরোধিতা সত্ত্বেও লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে বিজেপির আনা এই বিল ভোটাভুটিতে সহজেই পাশ হয়ে যায়। এই বিলের সপক্ষে পড়েছে ৩০২টি ভোট। বিপক্ষে ৭৮টি। বিরোধীদের মন্তব্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিলের বিরোধিতা করে আজ লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেন কংগ্রেস, তৃণমূল ও জেডিইউ সাংসদরা। আর কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা ওয়াকআউট করা সত্ত্বেও লোকসভায় পাশ হয়ে গেল বিতর্কিত মুসলিম মহিলা (নিরাপত্তা ও বিবাহের অধিকার) বিল বা তিন তালাক বিল। বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি করবে এই বিল, এমন অভিযোগ জানিয়ে ওয়াকআউটে শামিল হল বিজেপির জোটসঙ্গী জনতা দলের সাংসদরাও।
এদিন বিল সংক্রান্ত বিতর্কে অংশগ্রহণ করে জনতা দলের সাংসদ রাজীব রঞ্জন সিং বলেন, “কেউ স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ দেখতে চান না, কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে পারস্পরিক সম্মতি ও আস্থার উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেন দম্পতিরা। আইন তৈরি করে তাঁদের হয়ে আপনি কখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।”