হটাৎ এক বেনামি উড়ো চিঠি এসেছে একজন শিক্ষকের নামে। লেখা আছে ‘জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছেন, সাবধান।’ এই নিয়ে তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্রে এসে আলোচনা করতে গেলে বেরিয়ে পড়ে শুধু তিনি নন, তাঁর অনেক সহকর্মীদের নামেই এইরকম উড়োচিঠি এসেছে। চিঠিতে বলা হচ্ছে, স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয় তারা স্কুলের পড়ুয়াদের বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগ দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন। এমনকি আরও বলা হয় যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা৷ আবার কখনও কারও নামে আসছে মিড ডে মিলের টাকা চুরি করার অভিযোগ। কখন আবার শূকরের ছবিতে শিক্ষকদের নাম দিয়ে আসছে ছবি।
ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার খিদিরপুরের অ্যাকাডেমী স্কুলে। গত ৬ বছর ধরে ঘটছে এমন ঘটনা। দিনে দিনে আশঙ্কিত হয়ে পড়ছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে এক নয় দুই নয় মোট ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নামে দফায় দফায় আসছে উড়োচিঠি। যার জেরে শিকে উঠেছে স্কুলের পঠন-পাঠন। যার জেরে প্রায় দিন স্কুলে আসছে পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। শুধু তাই নয় অভিযোগের ভিত্তিতে নিজেদের নির্দোশ প্রমান করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা দিতে হচ্ছে স্থানীয় থানায় আবার কখনও ডিআই অফিসে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক আকার ধারণ করেছে যে, মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেষ পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা ওয়াটগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্কুলেরই কেউ এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। যদিও কে বা কারা যুক্ত তা যেহেতু এখনও অজানা, তাই আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমন অদ্ভুত ঘটনা শুধু সিনেমার চিত্রনাট্যতেই দেখা যায়, তবে তা বাস্তবের মাটিতে এমন ঘটনা ঘটায় বেশ শোরগোল পড়েছে।