এবারের একুশ ছিল ‘নতুন লড়াই’য়ের একুশ। কারণ ২৬ বছর আগের পুরনো অস্ত্রেই এবার নতুন করে শান দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই, তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার দাবিতে যে আন্দোলন করেছিলেন তিনি, ২১-র বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সেই তিরই ফের নিজের তূণীরে ফেরালেন মমতা। এদিন ইভিএমের বদলে ব্যালট ফেরানোর দাবিতে সরব হলেন তিনি। পাশাপাশি, নিজের একঘন্টার বক্তব্যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তীব্র আক্রমণ করে গেলেন বিজেপিকে। বাদ যায়নি কাটমানি ইস্যুও।
প্রসঙ্গত, কাটমানি নিয়ে সম্প্রতি বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে কোনও কোনও তৃণমূল নেতাকে। যাতে পরোক্ষ ভাবে ইন্ধন দিচ্ছে বিজেপি। এর পাল্টা হিসেবেই ব্ল্যাকমানি ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে চলেছে তৃণমূল। এদিন একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। বিজেপির উদ্দেশ্যে এদিন তাঁর প্রশ্ন, ‘তৃণমূলের কাছে কাটমানির টাকা ফেরত চাইছ। কিন্তু ব্ল্যাকমানির টাকা কোথায় গেল? কেন প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা এল না?’
আজ একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, আমি একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নজর রাখার কথা বলেছিলাম। আর বিজেপি গিয়ে বলছে, কাটমানি ফিরিয়ে দাও। ডাকাতদের সর্দার বলছে, কাটমানি ফেরত দাও। ওরাই তো সবচেয়ে বড় চোর। আমি নতুন কর্মসূচী নিচ্ছি, ব্ল্যাক মানি ফিরিয়ে দাও। পাশাপাশি উজালা প্ৰকল্প নিয়ে দুৰ্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি হুঙ্কার দেন, ‘গামছাবাবু উজালার কাটমানির হিসেব দাও।’
উল্লেখ্য, ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোট প্রচারে বেরিয়ে দেশবাসীর কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা হবে। এবং সেই টাকা থেকে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই সার। প্রথম দফায় ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করে ফের ভোটে জিতে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন মোদী। তবুও কারও অ্যাকাউন্টে এখনও এক টাকাও ঢোকেনি।
এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই এবার বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নামতে চলেছে তৃণমূল। এদিনের সভামঞ্চ থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের আগামী ২৬ ও ২৭ জুলাই ব্লক স্তরে আন্দোলনে নামার নির্দেশ দেন মমতা।