জলসংকটে ভুগছে গোটা দেশ। কমে আসছে জলস্তর। সেই তুলনায় বৃষ্টির দেখা নেই। শুকিয়ে নদী–জলাধার। কোনওরকমে জল সংগ্রহ করার চেষ্টায় সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ডের তেন্দুরা গ্রামে জল নেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা হচ্ছে জাতপাত।
জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে নদী বা জলাধারগুলি প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। ভরসা টিউবওয়েল কিংবা প্রশাসনের তরফ থেকে পাঠানো জলের ট্যাঙ্কার। কিন্তু তাতেও বিপত্তি। গ্রামের উচ্চবর্ণের মানুষরা, দলিতদের ওই টিউবওয়েল বা জলের ট্যাঙ্কারের ধারে–কাছেও ঘেঁষতে দিচ্ছেন না। এমনকি লাঠি হাতে বসানো হয়েছে পাহারাদারও। যাতে দলিতরা কেউ সেখান থেকে জল না নিতে পারেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে গ্রামেরই এক দলিত মহিলা রীতু কুমারি বলেন, ‘আমরা কখনই জল পাই না। ওদের ইচ্ছে হলে আমাদের এক বালতি জল দেয়। ব্যস ওটুকুই সম্বল। আমাদের জল আনতে সাত–আট কিলোমিটার হেঁটে দূরের গ্রামে যেতে হয়। সেখানে দলিতদের ব্যবহারের জন্য একটি টিউবওয়েল রয়েছে। তাও সেখানে এক বালতির বেশি জল পাওয়া যায় না। কারণ জলের স্তর এমনিই কমে এসেছে।’ এই পাহারা বসানোর প্রসঙ্গে অবশ্য অদ্ভূত যুক্তি উচ্চবর্ণের লোকেদের। তাঁরা জানিয়েছে, জলের স্তর কম। জল চুরি রুখতেই এই ব্যবস্থা। কিন্তু জল না দেওয়া তো অমানবিক ব্যাপার? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁদের সটান জবাব, ‘এখানে জঙ্গলের নিয়ম চলে। সব জল দিয়ে দিলে আমরা বাঁচব কীভাবে?’
এই প্রসঙ্গে জেলাশাসকের সাফাই, ‘তবে জল দেওয়ার ক্ষেত্রে কখনই জাতপাত দেখে না প্রশাসন। যাঁরাই আবেদন জানায়, তাঁদের গ্রামেই জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়। তবে আমাদেরও বাধ্যবাধকতা আছে।’ অন্যদিকে, প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক বিবেক সিং বলেন, ‘যাঁরা জলের বোতল কিনে খেতে পারেন, তাঁদের আবেদনেই সাড়া দিচ্ছে প্রশাসন। অথচ যাঁরা গরিব, তাঁদের ন্যূনতম সুযোগ–সুবিধাও দিচ্ছে না যোগীর প্রসাশন।’