একটা সময় পর্যন্ত রাজ্যবাসীর দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ ছিল লোডশেডিং। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই বাম-রাজত্বের সেই ‘অন্ধকার যুগের’ ইতি ঘটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক কালে এ রাজ্যে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। অথচ আশ্চর্যের বিষয়, লোকসভা ভোটের আগে জেলায় জেলায় লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যাপক ভোগান্তি হয়েছে সাধারণ মানুষের! তা নিয়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের কাছে নালিশ জানালেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। কারণ এই ঘটনায় তাজ্জব তাঁরা নিজেরাও। ফলে এর পিছনে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, ভোটের আগে সরকারকে অপদস্থ করতেই রাজ্য জুড়ে ইচ্ছাকৃতভাবে লোডশেডিং করানো হয়েছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পান্ডেকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোরগোল পড়েছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেও।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ফল আগের বারের তুলনায় খারাপ কেন হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই অনুসন্ধানে নেমেছে শাসকদল। তাতে নানাবিধ কারণ উঠে আসছে। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন এই লোডশেডিং। নবান্ন সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে স্বয়ং বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীকে এই রহস্যজনক লোডশেডিংয়ের কথা জানান। যা শুনে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যান তিনি। রাজ্যে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন ভোটের আগে লোডশেডিং রোখা গেল না, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েন বিদ্যুৎসচিব। ভোটের আগে কেন জেলায় জেলায় এ হেন লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও জমা দিতে বলেন তাঁকে। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়ে দেন, যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তা হলে দোষী অফিসারদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।