২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর পর্যালোচনা বৈঠকেই তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন এখন থেকে দল এবং সংগঠনের কাজে আরও বেশি মন দেবেন তিনি। সেই মতো কাজও শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু তাই বলে প্রশাসনের কাজেও খামতি রাখতে নারাজ মমতা। তাই এবার এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার গড়ার সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকারি কাজের পর্যালোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আগামীকাল, সোমবার নবান্ন সভাঘরে যে বৈঠক হতে চলেছে, সেখানে বর্তমান সরকারের ২০১১ সাল থেকে নেওয়া সব প্রকল্পের অগ্রগতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বর্তমান সরকারের শুরু থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত কাজকর্মের সঙ্গে বাম সরকারের অন্তত শেষ তিন বছরের কাজের তালিকাও তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, বাম সরকারের শেষ তিন বছরের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের এ পর্যন্ত কাজের তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, এতদিন পর্যন্ত সারা বছর ধরে জেলায় জেলায় গিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক সারতেন মমতা। সব জেলার প্রশাসনিক বৈঠক শেষ হয়ে গেলে সব দফতরকে নিয়ে রাজ্যস্তরে কাজের মূল্যায়ন করতেন তিনি। বিগত অনেক বছর ধরেই প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার তৈরি হচ্ছে প্রতিটি দফতরে। তাতে গোটা বছরের লক্ষ্য এবং কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়। বছরের শেষে পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন বৈঠকে ওই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দফতরগুলি এক বছরে কত কাজ শেষ করতে পেরেছে, কতটা বাকি রয়েছে ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ হত।
তবে এবার শুধু এক বছরের কাজের তালিকা নয়, তৃণমূল সরকারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত যত প্রকল্প, পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী কাজের অগ্রগতি এবং বাস্তবায়নের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে বিভিন্ন দফতর। একটি দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী গত সাত-আট বছরের সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি বিশ্লেষণ করতে চাইছেন। কোথাও কোনও খামতি রয়েছে কি না, তা-ও হয়ত বুঝতে চাইছেন তিনি। এত বছরের কাজের অগ্রগতির রিপোর্ট থাকলে খামতিগুলি সহজে ধরা যেতে পারে।’
সূত্রের দাবি, বিগত বাম সরকারের শেষের অন্তত তিন বছরে কাজের অগ্রগতির একটি রিপোর্ট তৈরির কাজও চলছে সমান্তরাল ভাবে। আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, অগ্রগতির নিরিখে দুই সরকারের সময়ের প্রকৃত ছবিটা দেখতে চাইছে বর্তমান রাজ্য সরকার। মোদ্দাকথা, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এবার তাঁর করা বিরাট উন্নয়ন যজ্ঞের ছোটখাটো ফাঁকফোঁকরগুলিও ভরাট করে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন মমতা।