ছোটবেলার ফেভারিট গল্প রবি ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ পড়তে যেমন ভালো লাগে তেমন সিনেমার পর্দায় দেখতেও। দেখেছিও বহু বার।
বায়োস্কোপওয়ালার ট্রেলার দেখেই তাই ইন্টারেস্ট জন্মেছিল ছবিটা দেখার। এ ছবিতে মিনি (গীতাঞ্জলি থাপা) থাকে ফ্রান্সে। ফিল্ম স্টাডিস নিয়ে পড়াশোনা করছে সেখানে। রবি বাসু (আদিল হুসেন) ছবির প্রথমেই দেখা যায় কলকাতার এয়ারপোর্টে বসে মেয়ের উদ্দেশ্যে একটি কনফেশন লেটার লিখছেন। আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি। বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। তাই মিনিকে কলকাতায় ফিরে আসতে হয়। এখানে এসে সে জানতে পারে যে তার বাবা আফগানিস্তান যাচ্ছিলেন। কিন্তু কেন?.. যে মানুষটার কাস্টোডি নিতে চেয়েছিলেন তার বাবা কে সেই রহমত খান? এসব প্রশ্ন তাড়া করে বেড়ায় মিনিকে। ভোলা কাকুর সঙ্গে খুঁজতে বেরোয় রহমত খানের অতীত।
এই রহমত খানের একটা অন্ধকার অতীত আছে তাও সে জানতে পারে কলকাতার অলিগলি ঘুরে। আর মিনির মনে পরে যায় এই রহমত খানই তার তার ছোট বেলার বায়োস্কোপওয়ালা যে তাকে গল্প বলতে শিখিয়েছিল। তারপর?….. থাক না কিছু অজানা।
এই ছবিতে কোনো ঢিসুম ঢিসুম মারপিট নেই। রোমান্টিক গান ও নেই। কিন্তু আছে হৃদয়ের উষ্ণতা। বাংলা হিন্দী ইংরেজি তিনটে ভাষারই সুন্দর মিশ্রণ রয়েছে ডেবিউট্যান্ট ডিরেক্টর দেব মেধেকের এর ছবিতে। ছবিটা দেখতে দেখতে কখন যে চোখের কোনে জল এসে গিয়েছিল তা বুঝতেই পারিনি। এই ছবি পিতা-পুত্রীর সম্পর্কের ছবি যা হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে। এ ছবির আসল হিরো গল্প। এ ট্রু মাস্টারপিস। গুলজারের লেখা বায়োস্কোপওয়ালা গানটা যেটা কে.মোহন গেয়েছেন সেটা খুব সুন্দর ভাবে এ ছবির অংশ হয়ে উঠেছে। এ গানটা না থাকলে যেন কেমন কি নেই কি নেই মনে হতো। আদিল হুসেন, গীতাঞ্জলি থাপা, তিসকা চোপড়া, ড্যানি ডেনজংপা এবং অন্যান্য সমস্ত অভিনেতা অভিনেত্রী ভীষণই সাবলীল। ড্যানি ডেনজংপাকে এত দিন পর পর্দায় দেখে যেন মনে হলো জিজ্ঞাসা করি, “এত দিন কোথায় ছিলেন?”
এ ছবি হয়তো হল-এ বিশেষ দর্শক টানতে পারবে না। তবে বিশ্বের দরবার থেকে পুরস্কার অবশ্যই আনতে পারবে।
আর হ্যা… আমি বলছি ছবিটা দেখো নিশ্চয় ভালো লাগবে।