১৭৭২ সালের ২২ মে দিনটি আপামর বাঙালির পাশাপাশি গোটা দেশের কাছেই একটা উল্লেখযোগ্য দিন। এই দিনেই হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্ম নেন রাজা রামমোহন রায়। বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়কেই বলা হয় ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ বা আধুনিক ভারতের জনক। বুধবার তাঁর ২৪৭তম জন্মদিনে এই মহাপুরুষকে টুইট করে শ্রদ্ধা জানালেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই টুইটে মমতা লেখেন, ‘সমাজসংস্কারক ও বাংলা রেনেসাঁর অন্যতম প্রধান পুরুষ রাজা রামমোহন রায়ের জন্মবার্ষিকীতে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম। সতীদাহ প্রথা লোপ থেকে শুরু করে আরও যেসব সংস্কারমূলক কাজ উনি করে গেছেন, তা আমাদের দেশের প্রগতিকে আরও ত্বরাণ্মিত করেছে, সমাজকে করেছে সমৃদ্ধ। কিন্তু এখন সমাজের একটি অংশ হিন্দুইজমকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই সময় দাঁড়িয়ে রাজা রামমোহন রায়ের কাজ বৃহত্তর তাৎপর্য বহন করে’।
রামমোহন রায়ের আমলে বাংলা ডুবে গিয়েছিল কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা এবং অশিক্ষার অন্ধকারে ৷ এই অন্ধকার দূর করতেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। তাই নিরন্তর লড়াইয়ের ফলে সতীদাহ প্রথার মতো ঘৃণ্য সামাজিক প্রথার অবসান হয়। তার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। ১৮১৪ সালে তিনি গড়ে তোলেন ‘আত্মীয়সভা’। ১৮২৮ সালে দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে ‘ব্রাহ্মসমাজ’ স্থাপন করেন রাম মোহন রায়।
পরবর্তীকালে এই ব্রাহ্মসমাজ এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পুরোধা হিসেবে কাজ করে। উপমহাদেশে জাতীয় চেতনার উন্মেষেও রামমোহন রায়ের প্রভূত অবদান ছিল। মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর রামমোহন রায়কে ‘রাজা’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৮৩১ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের দূত হিসেবে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ভ্রমণ করেন তিনি। ১৮৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মেনিনিজাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ব্রিস্টলে তাঁর জীবনাবসান হয়। এই বাঙালি মহাপুরুষের জন্মবার্ষিকীতে সেসব কথা স্মরণ করিয়ে রামমোহনকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।