গত রবিবার, ১৯ মে শেষ হয়েছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। তবে ইতি ঘটেনি গেরুয়া সন্ত্রাসের। কারণ ভোট মিটলেও অশান্তি মিটছে না বাংলায়। একদিকে যেমন অর্জুন বাহিনীর তান্ডবে রণক্ষেত্র চেহারা নিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া, তেমনই অশান্তির খবর এসেছে ওই জেলারই বসিরহাট থেকে। এরই মধ্যে বঙ্গ বিজেপির অনুরোধ মেনে নিয়ে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, অন্তত ২৭ মে পর্যন্ত বাংলায় থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আর কেন্দ্রের এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূলের প্রশ্ন, বাংলায় কি জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে?
প্রসঙ্গত, ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায় যে অশান্তি চলছে, তা আর রাজনৈতিক অশান্তির স্তরে নেই, কাঁকিনাড়ায় এখন ‘সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ’ শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৯ মে সপ্তম দফার ভোটগ্রহণের দিনে রাজ্যের ৯টি লোকসভা কেন্দ্রের সঙ্গে ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রেও ভোট হয়। দিনভর গেরুয়া বাহিনীর সন্ত্রাসে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে। ওই এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা ব্যারাকপুর লোকসভা আসনে এবার বিজেপির প্রার্থী হিসেবে লড়া অর্জুন সিংহের ছেলে পবন সিংহ ভাটপাড়ার বিজেপি প্রার্থী। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কামারহাটির প্রাক্তন বিধায়ক মদন মিত্র।
উল্লেখ্য, ভোটগ্রহণের দিন থেকেই মদন অর্জুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছেন। বোমা, গুলি, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া যে ভাবে সন্ত্রস্ত, তার জন্য যে অর্জুনই দায়ী সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তবে শুধু ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া নিয়ে অবশ্য নয়, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেই গেরুয়া সন্ত্রাসের খবর আসছে। কিন্তু উল্টে রাজ্য প্রশাসনের ওপরে কোনও ভরসা নেই বলে রাজ্যপালের কাছে মায়াকান্না জুড়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। এমনকী, প্রয়োজন হলে ২৭ মে-র পরেও যাতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে, সে আর্জিও রাজ্যপালকে জানিয়ে এসেছেন দিলীপ ঘোষরা।
আর এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতির বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছে তৃণমূল। মঙ্গলবার যে ২১টি দলের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন, সেই দলে তৃণমূলের তরফে সামিল ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। বাংলায় কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখা হচ্ছে? বাংলার জন্য আলাদা বিধি কেন, বাংলায় কি বিজেপি-আরএসএস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে? কমিশনে গিয়ে তৃণমূলের তরফে এই রকম প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রেই জানানো হয়েছে। তৃণমূলের আশঙ্কা, বাংলায় এমার্জেন্সি জারি করার ষড়যন্ত্র ফেঁদেছেন মোদী-শাহরা।