২০০২ এর পর ২০১৯-এ আবার। দেশী ম্যাগাজিন থেকে এবার নরেন্দ্র মোদী ঠাঁই পেলেন দুনিয়ার অন্যতম এলিট ম্যাগাজিন টাইম-এর প্রচ্ছদে। কিন্তু এটা ভারতবাসীর কাছে গর্বের নয় মোটেই, বরং লজ্জার।
কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নিয়ে নাচানাচির দুটো কারণ থাকতে পারে। একটি ইতিবাচক। অন্যটি নেতিবাচক। মোদীর ক্ষেত্রে কাজ করেছে নেতিবাচক ক্রিয়াটি। মোদীকে নিয়ে কভার স্টোরি করার সময় ইন্ডিয়া টুডে লিখেছিল, ‘হিরো অফ হেট্রেড’ অর্থাৎ ‘ঘৃণার নায়ক’। এবার এই ২০১৯ সালে মোদীকে নিয়ে কভার স্টোরি করার সময় টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে, ‘ইন্ডিয়াস ডিভাইডার ইন চিফ’ অর্থাৎ ভারতের বিভাজনের প্রধান। বোঝাই যাচ্ছে, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে কোন চোখে দেখে সারা বিশ্ব। আর সেটা ভারতীয়দের কাছে মোটেই গর্বের নয়। সেটা চূড়ান্ত লজ্জার।
এর মাঝে ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিন মোদীকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল, নরেন্দ্র মোদী একজন বিতর্কিত, উচ্চাকাঙ্খী ও কূট রাজনীতিক। অর্থাৎ সেবারও মোদীর সম্বন্ধে ভালো কিছু, সদর্থক কিছু লিখতে পারেনি টাইম।
প্রথমে ২০০২ তারপর ২০১২ এবং শেষে ২০১৯। সেই ঘৃণার রাজনীতির অগ্রপথিক হিসাবে নিজের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছেন মোদী। গুজরাতের গণহত্যার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর মোদী বারবার ঘৃণাই ছড়িয়েছেন। ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ভাতৃত্ব গড়ে তোলার কোনও ইচ্ছেই প্রকাশ করেননি তিনি। বরং এই বিভেদকেই নিজের আস্তিনের তাস বানিয়েছেন একজন যথার্থ খলনায়কের মতো। স্বাভাবিকভাবে টাইম চাইলেও মোদীর সম্বন্ধে ভালো কিছু লিখতে পারেনি। কারণ মোদীর কাজকর্মই তাঁর সম্পর্কে ভালো কিছু লেখার অন্তরায়। কার্যত ঘৃণার রাজনীতির এই পরম্পরাই মোদীকে ‘কুখ্যাতি’ দিয়েছে। বারবার টাইমের প্রচ্ছদে ঘৃণিত হিসাবে ঠাঁই করে নিয়ে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন মোদী।
একটা সময় গুগলে দুনিয়ার শীর্ষ ১০ দুষ্কৃতীর সার্চ করলে ২ নম্বরে আসত দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম। হ্যাঁ, ব্যাপারটা লজ্জার। সেই সময় এটা নিয়ে বহু জলঘোলাও হয়। রে রে করে উঠেছিলেন মোদীর অনুরাগীরা। পরে দুঃখ প্রকাশ করে গুগল মোদীর ছবি সরিয়ে নেয়। কিন্তু কথা হল, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। চেষ্টা করেও নয়। আঁশটে গন্ধ লুকোবেন কী করে! তা তো বেরোবেই। গতকাল এক নম্বর এলিট ম্যগাজিনের প্রচ্ছদ থেকে সেই আঁশটে গন্ধ টাই বেরিয়ে এল। সারা বিশ্ব ধিক্কার জানাল ঘৃণার রাজনীতির কুখ্যাত নায়ক নরেন্দ্র মোদীকে।