কথা দিয়ে তা না রাখার ক্ষেত্রে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনিতে তো কাজের কাজ কিছুই করেননি তার ওপর যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন তার একটা কথাও রাখেন নি। তাই নিয়ে মানুষের মনে কম অসন্তোষ জমা হয়নি। তাই মন ভোলাতে তিনি চালু করেছিলেন ‘আয়ুষ্মান ভারত’। যদিও সেটাও এক বিশাল বড় ধোঁকা!
প্রতিটি গরিব ভারতবাসীর জন্য ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত একটি বিমা প্রকল্প গত সেপ্টেম্বর থেকে চালু করেছেন। দেশের ৫ কোটি লোক নাকি উপকৃত হবেন! বাজেটে যেটুকু অর্থ আছে তা বেসরকারি চিকিৎসাকে তুষ্ট করতেই। তবে এই প্রকল্পে যে সাধারণ মানুষ মোটেও উপকৃত হননি তা বলাই বাহুল্য। বেশিরভাগ মানুষ তো আওতাভুক্তই হতে পারেননি এই প্রকল্পের। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের যেখানেই মানুষের ভারী অসুখ হোক না কেন, ইলাজ কে লিয়ে যেতে হবে লখনউ, এলাহাবাদ বা বারাণসী। গাড়ি ভাড়া করে কয়েকশো কিলোমিটার দূরের হাসপাতাল। সব সরকারি হাসপাতালে আয়ুষ্মান মিত্র আছে। বহুত প্রেমকে সাথ কহতি হ্যায়… এখানে বেড নেই। অমুক অমুক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাও! ফলে কার্ড থাকলেও তা ব্যবহার করার সুবিধা নেই।
আয়ুষ্মান কার্ডের ক্ষেত্রে বলা থাকে, কোন্ কোন্ বেসরকারি হাসপাতালে সুবিধে পাওয়া যাবে। সব বেসরকারি হাসপাতালে কার্ড দেখে গুরুত্ব দিচ্ছে। ডাক্তার দেখছে। তার পর ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে, বেড নেই কিংবা ঠিক ওই রোগের চিকিৎসা ওখানে ভাল হয় না!শেষ পর্যন্ত সেই গাড়িতে গ্রামে কিংবা কাছের নগর পঞ্চায়েতে ফিরে যাচ্ছেন। উনি তো জানেন না, হাকিম শেখ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে কোনও গুরুতর অসুস্থকেই সরকারি হাসপাতাল ফেরাতে পারে না! ফলে মানুষের চিকিৎসা করানো এখন বিশাল সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
শুধু এই প্রকল্পেই নয়, মোদী জমানায় উত্তরোত্তর খারাপ হয়েছে মানুষের অবস্থা। শৌচালয়ের জন্য ১২ হাজার বরাদ্দ। ২ হাজার টাকাও খরচ হচ্ছে কি না সন্দেহ। কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞাপনে দেখানো শৌচালয়ের সঙ্গে এর কোনও মিল নেই। কোনও গ্রামের রাস্তাই ভাল নয়। অখিলেশ যাদবের সময়ে বিপিএল এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রী সাইকেল পেত। এখন পায় না। স্কুলব্যাগ পেত। এখন পায় না। দশম শ্রেণি শেষে মেধাবীরা ৩৫ হাজার টাকা পেত। এখনও সেটা চালু। ল্যাপটপ পেত সব পড়ুয়া, এখন পায় না। যোগী সরকার মুলায়মের করা কাইফি আজমি অ্যাকাডেমিতে অর্থ–সাহায্য বন্ধ করেছে। গান্ধী আশ্রমের উৎপাদনকে শিল্পসামগ্রীর আওতায় এনে কর চাপিয়েছে। গ্রাম–সড়ক যোজনায় নতুন রাস্তা হয়নি। পুরনো রাস্তা মেরামত হয়নি। রাস্তা খুবই খারাপ।
মোদীর আমলে যখন মানুষ দেশে ভুগছেন তখন স্বাস্থ্যসাথী-সহ নানারকম প্রকল্পে উপকৃত হচ্ছেন মমতার বাংলার মানুষ। মমতার হাত ধরেই ভালো আছে বাংলা। তাই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আবারও মোদীকে গোলের মালা পরালেন মমতা।