‘বিজেপির ধর্ম মানুষ খুনের ধর্ম। তা প্রচার করেই দেশব্যাপী অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে ওরা। আমি বিজেপির এই ধর্ম মানি না’। সোমবার বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের সমর্থনে জামালপুরে সভা করতে এসে এভাবেই বিজেপিকে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার দেশের কী ক্ষতি করেছে, তার খতিয়ান তুলে ধরে মোদীর তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘নোটবন্দী থেকে জিএসটি সবক্ষেত্রেই গরীব মানুষের ক্ষতি করেছে বিজেপি। ছোট ব্যবসায়ীরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জায়গায় জায়গায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়িয়ে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে ওরা। তাই এবার ভোটে মানুষই তাদের ক্ষমতা থেকে তাড়াবে। নির্বাচন এলে চাকরি কত হয়েছে, কত কৃষক মারা গিয়েছে – এসব না বলে পুলওয়ামা ও বালাকোট নিয়ে কথা বলছে। একদিন দেখা গেল, ৫০০ ও ১০০০-এর নোট বাতিল৷ মেয়েদের লক্ষ্মীর ঝাঁপি বাতিল৷ ও করেছে নোটবন্দী, আপনারা করুন ভোটবন্দী। একটাও ভোট দেবেন না মোদীকে৷’
বিজেপি মানুষের আশাপূরণ ব্যর্থ হলেও মা-মাটি-মানুষের সরকার সব কাজ করে দিয়েছে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘এই রাজ্যে যা কাজ হয়েছে তা কোনও রাজ্য করতে পারেনি, চ্যালেঞ্জ করে বলছি৷ আপনাদের এখানেও নতুন শিল্প গড়ে উঠেছে। মিষ্টি হাব তৈরির কাজও চলছে। দিল্লীর এই নির্বাচনে আমাদের রাজ্য থেকে ৪২টি আসনে জিতিয়ে দিন। তাহলে দেশের সরকার গড়তে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারব’।
এরপরই নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে কটাক্ষ মমতা বলেন, ‘দিল্লীর দুই জগাই-মাধাই এসে আমাকে ভাষণ দিচ্ছে৷ চণ্ডীতলায় নিজেরা গন্ডগোল করেছে আর মুসলিমদের উপর দোষ দিচ্ছে৷ খুব ভাল করে ওদের চিনি৷ এখানে কারও উপর কোনও অত্যাচার হয়? আপনারা শান্তিতে আছেন তো? একটা পার্টি জনগণের কাজ করে না৷ নির্বাচনের আগে শুধু সাম্প্রদায়িক অশান্তি লাগায়৷ আপনারা কি সাম্প্রদায়িক অশান্তি চান? আমরা কেউ অশান্তি বা যুদ্ধ চাই না৷ কিন্তু, ওগুলোই ওদের উদ্দেশ্য। এরাজ্যে এখন তো আবার সিপিএমের হার্মাদ বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে৷ কোনওদিন বাংলায় আসে না, বিপদে তাকিয়ে দেখে না৷ আর এখন নির্বাচনের সময়ে বসন্তের কোকিলের মতো কুহু কুহু করে ডাকছে৷ বলছে, ভোট দাও৷ আর মোদীবাবু তো নিজের নামে সিনেমা, জামা, টুপি বিক্রি করছে। ক’দিন বাদে জুতোর দোকান করবে৷’ বিজেপির পাশাপাশি আরএসএস-কেও তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। টাকার বস্তা নিয়ে আরএসএস ভোট কিনতে এসেছে বলেও অভিযোগ জানান। কটাক্ষ করে বলেন, ‘আরএসএস-এ এখন শপিং মল কালচার চলছে। টাকার বস্তা নিয়ে ভোট কিনতে এসেছে ওরা। টাকা দিতে এলে নেবেন, কিন্তু ভোট দেবেন না৷’