লোকসভা ভোট চলাকালীনই রয়েছে রামনবমী। আর আগের বারের মতো এবারও যে রামনবমীর দিন হাতে অস্ত্র নিয়ে গোটা রাজ্যে মিছিল করবে তাঁর দল, শুক্রবারই সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আবারও ভোট-পর্বের মধ্যে অস্ত্র হাতে রামনবমী পালন করার ডাক দিল বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় আজ, শনিবার থেকেই সশস্ত্র এবং বাইক মিছিল হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, কোনও বাধা-নিষেধের পরোয়া না করে তাঁরা যে অস্ত্র নিয়েই রামনবমীর মিছিল করতে চান, শুক্রবার তা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপের হুঁশিয়ারি, রামনবমীর অস্ত্র মিছিলে বাধা দিতে এলে প্রশাসনকে যোগ্য জবাব দেওয়ার হবে। এর পরিণাম ‘ভয়ঙ্কর’ হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ভোট-প্রচারের সময়ে ধর্মীয় অনুষঙ্গ ব্যবহার করা যখন নিষিদ্ধ, তখন এমন কর্মসূচি কী ভাবে হতে পারে? এ নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থও হয়েছে তৃণমূল।
তবে অস্ত্র মিছিল নিয়ে দিলীপের ব্যাখ্যা, ‘রামনবমীতে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা ঐতিহ্য। যার যেটা ঐতিহ্য, সে সে ভাবে করবে। ভোট এসেছে বলে বা কোনও সরকারের জন্য আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক পরম্পরা ছেড়ে দেব, এটা হতে পারে না!’ ভোটের সময়ে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ ছড়ানোর দায়ে বিরোধীরা যে কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যাক কমিশনে! কিন্তু আমার ধর্মীয় অধিকার আমি পালন করব। সংবিধান সেই অধিকার আমাকে দিয়েছে। আমাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
প্রশাসন বাধা দিলে কী হবে? দিলীপের হুমকি, ‘পরিণাম ভয়ঙ্কর হবে। ভোটের মধ্যে জনগণের থাপ্পড় খেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারবেন না!’ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ভারতের সংগঠন সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহও বলেন, ‘যে রীতি এবং ঐতিহ্য মেনে রামনবমীর মিছিল হয়, এ বারেও তা-ই হবে।’
গেরুয়া শিবিরের এমন হুঙ্কারের প্রেক্ষিতেই সতর্কতা নিচ্ছে কমিশনকেও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য চেয়েছে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে রামনবমীর জন্য দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে সম্মত হয়েছে তারা। প্রাথমিক ভাবে ব্যারাকপুর এবং আসানসোলে ওই বাহিনী ব্যবহার করা হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর।