বৃহস্পতিবার গুয়াহাটির গরাইমারি ও সন্তালিতে দলীয় প্রার্থী মনোজ শর্মার সমর্থনে সভা করেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। কাম্রূপের গড়াইমারি এলাকার জনসভার মঞ্চে নাগরিকপঞ্জী নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন ফিরহাদ।
সভামঞ্চ থেকে ফিরহাদ বলেন, “ বাংলায় নাগরিকপঞ্জী হবে না”। মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার আপনি কে? বলা হচ্ছে ১৯৭২ সাল থেকে নাগরিকপঞ্জী ধরা হবে, তাহলে এখন যাঁদের বয়স প্রায় ৪৭ তাহলে তাঁরা সকলে অনুপ্রবেশকারী? এটা কি ছেলেখেলা হচ্ছে? এসব কোনও মতেই আমরা বরদাস্ত করব না। আসামের যে মানুষ বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, তাঁদের রাজ্য থেকে তাড়াতেই এনআরসি চালু করছে বিজেপি সরকার। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য”।
তিনি বলেন, “এক সময়ে কংগ্রেসের মন্ত্রী ছিলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি দল বদলে বিজেপিতে গিয়েছেন। ২০১৬ সালে অসমে ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার। তারা ক্ষমতায় এসেই এনআরসি বিল আনে। আসলে যেখানে তাদের ভোট নেই, সেখানে এনআরসি চালু করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে বিজেপি সরকার। যারা এর আগে ভোট দিল, এবার যদি সেই মানুষের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে বিজেপি সরকারকেও বাতিল ঘোষণা করতে হবে। এই বিল বাতিল করতে হবে। যে বিলের মাধ্যমে ৪০ লক্ষ মানুষকে আজ চরম বিপদে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আটবার ভোট দিয়ে সরকার গড়লেন, আজ তাঁদের বলা হচ্ছে আপনারা ভারতীয় নন, বেরিয়ে যান। তাঁরা পরিবার নিয়ে কোথায় যাবেন?”
ফিরহাদ আরও বলেন, “এনআরসি’র প্রতিবাদ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম থেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি করে কোথায় পাঠানো হবে? বাংলাদেশ কি এই ৪০ লক্ষ মানুষকে গ্রহণ করবে? বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কি কোনও কথা হয়েছে? নাকি রোহিঙ্গাদের মতো গুলি করে তাঁদের মারা হবে? তার প্রতিবাদ জানাতে হবে আগামী লোকসভার ভোটে। এরপর আবার সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্টবিল বিল আসছে, সেটি আরও মারাত্মক। বিজেপি রক্তপাত চায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রক্তপাতের বিরুদ্ধে। তিনি রক্তক্ষরণ চান না। তৃণমূল এনআরসি’র বিরুদ্ধে। সে কারণেই আমরা অসমে প্রার্থী দিয়েছি, আপনারা তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থন করুন”। উল্লেখ্য, তৃণমূল এবার লোকসভা ভোটে এখানে আটজন প্রার্থী দিয়েছে।এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা সোহম, রাজ্যসভার সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেন, তুষার শীল প্রমুখ।