ভোটের বাকি মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। ভোটের আগে নিরাপত্তায় আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি নেওয়া হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার সাত দফায় নির্বাচন হওয়ার ফলে ধাপে ধাপে একটা বড় সময় ধরে রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি কেন্দ্রীয় বাহিনীর হেফাজতে থাকবে। ফলে পঠনপাঠনের সঙ্গে সঙ্গে এতটা সময় ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হেফাজতে থাকলে গোটা রাজ্যের স্কুলগুলিতে কিছু সমস্যা হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকায় হলেও তার পরিকাঠামো সুবিশাল। প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলছিলেন, “পঞ্চায়েত, বিধানসভা বা লোকসভা সব নির্বাচনেই আমাদের স্কুল ব্যবহার করা হয়। এবার বিকল্প খোঁজা হচ্ছিল। আমাদের স্কুলটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ, একসঙ্গে ৫২টি ঘর আমাদের স্কুলেই রয়েছে। আমাদের স্কুল ইউনেস্কো, ইউনিসেফ এবং রাজ্য সরকারের যামিনী রায় পুরস্কার পেয়েছে। চার হাজার ছাত্রছাত্রী এখানে পড়ে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, টানা ১২-১৪ দিন স্কুল বন্ধ রাখতে হয়”। এবিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
ভোটের প্রয়োজনে স্কুলটি যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তেমনই বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক ভোটের মধ্যেও স্কুলের পঠনপাঠনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘোষডিহা হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “বিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। স্কুলকে যে পঠনপাঠন ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না, সে ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের নির্দেশ রয়েছে। তা সত্ত্বেও স্কুলশিক্ষার মতো জরুরি বিষয় ব্যাহত করে বারবার এ কাজ হয়ে চলেছে”।
স্কুলের সঙ্গে ছাড় পাচ্ছে না কলেজগুলিও। রাজ্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর আস্তানা হিসেবে অধিগ্রহণ করার কাজ শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রেও কলেজের অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক শিক্ষিকারাও চাইছেন এর একটা স্থায়ী সমাধান হোক। সেই জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরাও। শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক কিঙ্করবাবু শিক্ষিকাদের ভোটের ডিউটি দেওয়ার আগে তাঁদের নিরাপত্তা প্রদানকে সুনিশ্চিত করার দাবিও তুলেছেন।