প্রথম দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৫ মার্চ। কিন্তু বাংলায় এখনও প্রার্থী তালিকাই ঘোষণা করে উঠতে পারল না গেরুয়া শিবির। আর প্রার্থী ঘোষণায় বিলম্বের জেরেই রাজ্যে জোর আতান্তরে তারা। উল্লেখ্য, প্রথম দফায় বাংলার যে দুই আসনে ভোটগ্রহণ হবে, সেই আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার কেন্দ্রের প্রার্থীরা শুধু একটা দিনই সময় পাবেন মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য। তবে বুধবার যদি ঘোষিত হত প্রার্থীদের নাম, তা হলে মনোনয়ন জমার কাজ কিছুটা অন্তত এগিয়ে রাখা যেত। সে কথা মাথায় রেখে গতকাল বিকেলের আগেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে চাপ বাড়িয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে দিল্লীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয় বিজেপির নির্বাচন কমিটির। কিন্তু বাংলার নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসার সুযোগ কেন্দ্রীয় নেতারা পাননি। তাই বাংলার প্রার্থীতালিকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। বুধবার দুপুরে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বৈঠকে বসেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের সঙ্গে। বিজেপি সূত্রের খবর, প্রথম তিনটি দফায় বাংলার যে ১০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে, এ দিন সেই আসনগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকটি আসনের জন্য ৪ জন করে প্রার্থীর নামের তালিকা তৈরি করে সর্বভারতীয় সভাপতির সামনে পেশ করেছে বঙ্গ বিজেপি।
কেন ৪ জন? বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতাদের মধ্যে মতানৈক্য ছিল প্রার্থী বাছাই নিয়ে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা সঙ্ঘের পছন্দের প্রার্থীকে কোনও কোনও ক্ষেত্রে মেনে নিতে চাননি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বা রাজ্য বিজেপির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মুকুল রায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার রাজ্য নেতৃত্বের পছন্দের সঙ্গে মেলেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতামত। তাই ৪ জন করে প্রার্থীর নামের তালিকা তৈরি করতে হয়েছে। তবে ওই বৈঠকেও খুব মসৃণ ভাবে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করা যায়নি বলেই খবর। ৪ জনের মধ্যে কাকে বেছে নেওয়া হবে, অধিকাংশ আসনের ক্ষেত্রেই তা নিয়ে নেতাদের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে বলে জানা গেছে। কবে বা ঠিক কখন প্রার্থীদের নাম ঘোষিত হবে, সে বিষয়েও কেউ স্পষ্ট করে কিছু জানাননি।
প্রথম দফায় ভোট হবে আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার আসনে। ওই দুই কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ মার্চ অর্থাৎ সোমবার। কিন্তু সোমবারের আগে যে চারটে দিন পড়ে রয়েছে, তার মধ্যে ২১ ও ২২ মার্চ দোল এবং হোলির ছুটি। ২৩ ও ২৪ মার্চ সপ্তাহান্তিক ছুটি অফিস-কাছারিতে। অর্থাৎ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য শুধু সোমবারটাই থাকছে বিজেপির হাতে। ওই দিনেই আদালতে গিয়ে হলফনামা জমা করতে হবে। তার পরে জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে জমা দিতে হবে মনোনয়নপত্র। দুটো কাজই সময় সাপেক্ষ। এক দিনে ওই দুটো কাজ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয় রাজ্য বিজেপিতে। এই কারণেই বুধবার বিকেলের আগেই আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের প্রার্থীদের নাম অন্তত ঘোষণা করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপরে চাপ বাড়ায় রাজ্য বিজেপি। কিন্তু আদতে তাতে কোনও লাভই হয়নি। প্রার্থী তালিকায় ঘোষণায় এ রাজ্যে তারা সেই লাস্টবয়ই রয়ে গেল।