ফলন ভাল হলেও প্রায় প্রতি বছরই ফসলের দাম না পেয়ে হতাশ উত্তর প্রদেশের কৃষকেরা। অথচ সরকার উদাসীন। তারা শুধু ঋণ কিংবা নয়া প্রকল্প এনে দায় ঝেড়ে ফেলতে চায়। কিন্তু এই দয়ার দান তাঁরা চান না। তাই প্রধানমন্ত্রীর কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার অনুমতি চাইলেন প্রদীপ শর্মা নামে এক কৃষিজীবী। এমন ঘটনা ভোটের মুখে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখে প্রদীপ শর্মা জানিয়েছেন, প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা ঋণ রয়েছে তাঁর। এই ঋণ শোধ করা কখনই সম্ভব নয় তাঁর। তাই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আত্মহত্যার অনুমতি দিলে তিনি বেঁচে যাবেন। যোগীকে প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের দু’ হাজার টাকাও ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রদীপ। তাঁর কথায়, পরিবার দৈনিক গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থাটুকও করতে পারছেন না একেবারেই। এর আগেও তিনি জেলাশাসককেও চিঠি লিখেছেন। ২০১৬ সালে শস্যের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরে সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন প্রদীপ। কিন্তু তিনি উত্তর পাননি সে চিঠির।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দিল্লি দিয়েছিলেন প্রদীপ। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন, কিন্তু ফিরেছিলেন খালি হাতে। সেই সময় তাঁর কাকাও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঋণ শোধ করতে না পারার চিন্তায়, এমনটাই বলেন প্রদীপ। তাই বাধ্য হয়েই আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে চাইছেন তিনি। সরকারি প্রকল্পের দু’ হাজার টাকা তাঁর কোনও কাজে আসবে না, তাই মুখ্যমন্ত্রীকে সেই টাকা ফেরত পাঠিয়েছিলেন, সংবাদ সংস্থাকে এমনটাই জানান প্রদীপ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এর আগে ফসল বিক্রির টাকা পাঠিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষক সঞ্জয় শাঠে। কৃষকদের দুর্দশার কথা জানাতেই, নাসিকের নিফাদ তহশিলের সম্ভ্রান্ত চাষি সঞ্জয় বলেছিলেন, ‘ফলন ভালই হয়েছিল। স্থানীয় নিফাদ পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি এক টাকা দর দেয় ব্যাপারীরা। শেষ পর্যন্ত এক টাকা চল্লিশ পয়সা দরে রফা হয়। ৭৫০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে হাতে পাই মাত্র ১০৬৪ টাকা। সেই টাকাই পাঠিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে।’
