বাঁকুড়া পৌঁছেই প্রচারের ঝড় তুলেছেন তিনি। টোটোয় চড়ে মন্দির-মসজিদ-গির্জায় ঘুরে ঘুরে সম্প্রীতির বার্তাও দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ির পুজোর ঘরে যেমন গঙ্গাজল আছে, তেমনই মক্কার জলও আছে। বিজেপি যেখানে চায় শুধু একটি ধর্ম আর রাম মন্দির, সেখানে তিনি চান রাম-রহিম-যীশুর মন্দির। সর্বধর্ম সমন্বয়। তিনি মানবধর্মে বিশ্বাসী রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী ও বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
ভোটের প্রচারে রবিবার সন্ধ্যায় নিজের কেন্দ্র বাঁকুড়ার মাটিতে পা রেখেছেন তৃণমূলের এই বর্ষীয়ান নেতা। রাত পোহাতেই সোমবার সাতসকালে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টোটোয় চড়ে বেরিয়ে পড়েন বাঁকুড়া শহরে। সহজ সরল ব্যবহার, আন্তরিক কথাবার্তা এবং নিরহঙ্কার আচরণের কারণে সুব্রত যেখানেই গেছেন, সেখানেই জয় করে নিয়েছেন মানুষের মন।
গতকাল সকালে তিনি প্রথম পুজো দিতে যান শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মহামায়ার মন্দিরে। আগে থেকেই প্রচার হয়ে গিয়েছিল পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুজো দিতে আসবেন। ফলে সেখানে তাঁকে দেখার জন্য জমে যায় ভিড়। সেখানের পুজো সেরে তিনি যান শহরের আরেক জনপ্রিয় ভৈরবস্থানের মন্দিরে। সেখানেও তখন তাঁকে দেখার জন্য মানুষের ভিড়। সেখান থেকে যান স্কুলডাঙার মোড়ে সেন্ট্রাল চার্চে। সেখানেও একই অবস্থা। এরপর তিনি যান শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলার সবচেয়ে বড় মসজিদটিতে। সেখানেও একই ছবি দেখা যায়।
এরপর তিনি শহর ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিমি দুরে যান জনপ্রিয় মন্দির এক্তেশ্বরে। সেখানে শিবের পুজো দিয়ে তিনি আসেন শহরের শেষ প্রান্তে লখিয়াতোড়া মহাশ্মশান কালীমন্দিরে।
এক্তেশ্বরের মন্দিরে তিনি এসেছেন শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন ওই গ্রামের ৮-৮০ শিশু থেকে বৃদ্ধবৃদ্ধা। সকলেরই ইচ্ছে একবার তাঁকে দেখার। জানা গেছে, এই কারণেই তিনি স্করপিও গাড়িতে না চড়ে চেপেছিলেন একটি টোটোতে। যাতে রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো মানুষ তাঁকে দেখতে পান।
পুজোপর্ব শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মানবধর্মে বিশ্বাসী। আমার পুজোর ঘরে যেমন গঙ্গার জল আছে, তেমনই আছে মক্কার জলও।’ তাঁর কথায়, ‘মন্দির, মসজিদ, গির্জা সবকিছু নিয়েই আমরা বড় হয়েছি। নির্বাচনের জন্য নয়, আমরা সবসময় সবধর্মকে সম্মান দিয়ে চলি। আমরা সব ধর্মের পূজারি।’ এরপরই বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘বিজেপি চায়, দেশে শুধু হিন্দু ধর্মই থাকুক, বাকি সব ধর্ম মুছে যাক। তাই ওদের দাবি শুধু রাম মন্দির গড়ার। কিন্তু আমরা চাই রাম-রহিম-যীশুর মন্দির। সকলের সমন্বয়।’