ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসের রেল স্টেশন লাগোয়া ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে মুম্বইয়ে এখনও পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ত্রিশেরও বেশী। আজ শনিবার সকালেও দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকার্য চলছে৷ এই দুর্ঘটনার পরেই রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের পদত্যাগ দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপিকে বিঁধে ২০১৭ ও ২০১৮-তে ঘটে যাওয়া মুম্বইয়ের দুটি বড় দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস মুখপাত্র রনদীপ সিং সুরজেওয়ালা টুইটারে লেখেন, ‘রেলমন্ত্রীর দেওয়া বড় বড় প্রতিশ্রুতি, বারবার ব্যর্থ হচ্ছে৷ এখনই রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের ইস্তফা দেওয়া উচিত৷ অথবা তাঁকে পদচ্যুত করা উচিত’।
এই ব্রিজ ভেঙে পড়া কাণ্ডে ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা গিয়েছে, ছ’মাস আগে হওয়া অডিট রিপোর্টে ওই ব্রিজকে ‘ফিট’ বলে জানানো হয়েছিল৷ এবং সেই রিপোর্ট জমা পড়েছিল বিএমসি-তে৷ রিপোর্টে বলা হয়, ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস রেলস্টেশন লাগোয়া ওই ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহারের উপযোগী৷ এরপরই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের তরফ থেকে প্রশ্ন উঠছে, ‘ব্রিজের পরিকাঠামো পরীক্ষা করা সত্ত্বেও কেন সেটি ভেঙে পড়ল?’ এই দুর্ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস৷ মৃত ও আহতদের আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার৷
ঘটনার সময় কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মুম্বইয়ের জিটি হাসপাতালের নার্স রঞ্জনা তাম্বে। কিন্তু ব্রিজের নীচ দিয়ে যাওয়ার সময়েই ভেঙে পড়ে ব্রিজটি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর আত্মীয় রোশন তাম্বের বক্তব্য, ‘সাড়ে ৯ টা থেকে ১০টার মধ্যে কেউ একজন ফোন করে আমাদের জানায়, ফুটব্রিজ ভেঙে পড়ায় মারা গিয়েছেন রঞ্জনা তাম্বে। বৃহস্পতিবার তাঁর নাইট ডিউটি ছিল, সেসময় তিনি কাজে যাচ্ছিলেন তখনই ঘটনাটি ঘটে।’ এরপরই রঞ্জনা তাম্বের আত্মীয়ের প্রশ্ন, ‘এই মৃত্যুর দায় কে নেবে?’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি আবার বলেন, ‘বলা হচ্ছে কয়েকদিন আগেই ব্রিজটির পরিকাঠামোর পরীক্ষা করা হয়েছিল। আর পরীক্ষানিরীক্ষার পরও যদি এভাবে ফুটব্রিজটি ভেঙে পড়ে তাহলে তো আধিকারিকদের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন থাকছে।’ তাম্বের আরেক আত্মীয়ের কথায়, ‘ওরা বলছে সমস্ত ব্রিজের সার্ভে করা হয়েছে। তাহলে কীরকম সার্ভে হয়েছে? যদি ব্রিজটি ভালই থাকত, তাহলে সেটি ভেঙেই বা পড়ল কেন?’
