ভোটের আগে থেকেই এ রাজ্যে বি-পাঁকে বিজেপি। সদ্যই ভোট ঘোষণা ও নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে, কোথাও প্রার্থী বাছাই নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার বিজেপি, আবার কোথাও বা বাংলার শাসক দলের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো অবস্থাই নেই তাদের। যেমন রাণাঘাটে প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে অথৈ জলে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। কারণ প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠীর তরফ থেকে দলীয় নেতৃত্বের কাছে একাধিক নাম এসেছে। ফলে কোন্দলের জেরে এখনও ওই কেন্দ্রের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি গেরুয়া শিবিরের নেতারা। আসলে কোনও নামেই সার্বিক সহমত পোষণ করতে পারছেন না তাঁরা।
প্রসঙ্গত, রাণাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে প্রার্থী করে মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যজিৎ মতুয়া মতালম্বীদের মুখ ছিলেন। তাই তাঁর স্ত্রী প্রার্থী হওয়ায় মতুয়াদের ভোট শাসক দলই টেনে নেবে বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ। ফলে মতুয়াদের ভোট পেতে মতুয়া মুখই চাইছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, মতুয়া মুখ না হলে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দেওয়া যাবে না।
জানা গেছে, দলীয় নেতা মুকুল রায়ের অনুগামী বলে পরিচিত অর্চনা মজুমদারের নাম আলোচিত হচ্ছে বেশি। তবে তাঁকে জেলার নেতাদের অনেকেই চাইছেন না। আবার প্রার্থী হিসেবে বিজেপির নদিয়া(দক্ষিণ) জেলার সভাপতি জগন্নাথ সরকারের নামও উঠে আসছে। তবে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে চাইছেন দলের জেলা সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ভৌমিক। এছাড়া, গতবারের প্রার্থী সুপ্রভাত বিশ্বাসের ছেলে সুজিত বিশ্বাসের নাম প্রার্থী হিসেবে উঠে এলেও একগোষ্ঠীর তাতে আপত্তি রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রার্থী বাছাই নিয়ে এমন দলীয় কোন্দলের জেরে এখনও কিছু ঠিক করে উঠতে পারেনি দিলীপ ঘোষরা।
অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটের আগেই ‘হীনবল’ বিজেপি। দলের নেতারা এখানে রাজনীতির কারণে মুখে চ্যালেঞ্জ করলেও এই ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো অবস্থায় নেই জেলা বিজেপি। কারণ যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। নেতৃত্বের সংকটই কার্যত বিপাকে ফেলেছে এই জেলার গেরুয়া শিবিরকে। তাই এই পরিস্থিতিতে বাহিনীকে ভরসা করা ছাড়া আর কোনও উপায়ই নেই বিজেপির। আর এ কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন খোদ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের প্রচার মানেই দু’পক্ষের সভায় কথার ফুলঝুড়ি ফুটবে। নানা ইস্যুতে বিরোধীরা শাসক দলকে নাস্তানাবুদ করার চেষ্টা করবে। কিন্তু জেলায় বিরোধী বলে পরিচিত বিরোধীর এখন পুরোপুরি বন্দীদশা। কারণ গ্রেফতারি ঠেকাতে এই মুহূর্তে ঘরছাড়া জেলার বহু বিজেপি নেতাই। আর এমন কর্মীদের নিয়ে নিয়ে প্রচারে বের হওয়া সর্বত্র সম্ভব নয়। তাই রাজ্যের ঠিক করা কিছু রুটিন কর্মসূচী ছাড়া তেমন কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচী নিতেই পারছে না গেরুয়া শিবির।