শিল্প পরিকাঠামোর জন্য গঠিত দেশের সব থেকে বড় আর্থিক সংস্থা আইএলএফএস ঋণভারে জর্জরিত হওয়ায় দেশের লক্ষ লক্ষ প্রভিডেন্ট ফান্ড গ্রাহকদের সঞ্চিত আমানত খোয়া যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন তিনি। সোমবার চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে পুরো ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের স্বার্থে যেন ঘা না পড়ে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস’-এর ঋণ এখন প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, আইডিবিআই, এমএমটিসি, আইওসিএল, ইলেকট্রিসিটি বোর্ডস অব গুজরাট অ্যান্ড হিমাচল প্রদেশ, সিডকো, হাডকো-র মতো বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কয়েক লক্ষ কর্মচারীর প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন ফান্ডের টাকা এই আইএলএফএস-এ বিনিয়োগ করা হয়।
কিন্তু ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হঠাৎ করেই দেখা যায়, এই সংস্থার ক্রেডিট রেটিং কমিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা। যদিও ওই বছরের জুন মাসে ক্রেডিট রেটিং ছিল ‘এএএ’। তাহলে কী এমন হল যে, মাত্র তিন মাসের মধ্যে ওই সংস্থার ক্রেডিট রেটিং এত কমে গেল? সেই প্রশ্নই তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার পরই লক্ষ লক্ষ মানুষের পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে। এর বিহিত চেয়েছেন মমতা।
তিনি বলেছেন, এই সংস্থায় জাপানের অরিক্স কর্পোরেশন এবং আরবের আবুধাবি ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি বিনিয়োগ করেছে। এখন এই সংস্থার ক্রেডিট রেটিং এইভাবে হঠাৎ করে এত কমে গেলে বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি খারাপ হবে। মমতার অভিযোগ, এমনিতেই নোটবন্দী ও জিএসটির ফলে দেশের সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন সময় এই সংস্থার আর্থিক বিপর্যয়ের খবরে এই সংস্থায় বিনিয়োগ করা সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের ভবিষ্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে।