‘আসুক না সিবিআই। আমি রান্না করে খাওয়াব। যা চাইবে তাই খাওয়াব। ভেজ চাইলে ভেজ। নন ভেজ চাইলে নন ভেজ।’ এবার ঠিক এই ভাষাতেই সিবিআইকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই গোয়েন্দারা যে দিন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়ির দরজায় পৌঁছেছিলেন, সে দিনই মমতার রুদ্রমূর্তি দেখেছিল গোটা দেশ। বুধবার, নয়াদিল্লীর যন্তর মন্তরে বিরোধীদের ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই প্রসঙ্গ নিজেই তুললেন বাংলার ‘বাঘিনী’।

এদিন শুরু থেকেই সিবিআই ইস্যুতে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। বিজেপির ঝাঁঝালো সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভাবে পেরে না উঠলেই ওরা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সিবিআই লেলিয়ে দিচ্ছে! কী সাহস! কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে কিনা সিবিআই পাঠিয়ে দিয়েছে! এখানেই না থেমে তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘আমি ওসবে ভয় পাই না। আমাকে চমকে লাভ নেই। আসুক না সিবিআই। আমি রান্না করে খাওয়াব। যা চাইবে তাই খাওয়াব। ভেজ চাইলে ভেজ। নন ভেজ চাইলে নন ভেজ।’
বিরোধীদের বিরুদ্ধে এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তাঁর নতুন নয়। উনিশে ব্রিগেডের মঞ্চে এ ব্যাপারে দিদির সুরেই সুর মিলিয়েছিলেন অখিলেশ, তেজস্বীর মতো দেশের বিরোধী নেতারা। সেদিনই আবার আইআরসিটিসি মামলায় পাটনায় ইডি দফতরে হাজিরা দিয়ে ব্রিগেডে এসেছিলেন লালু-পুত্র। ভরসা দিয়ে দিদি বলেছিলেন, ‘ভয় পাবে না একদম। সাহসের সঙ্গে লড়ো।’

উল্লেখ্য, ৩ ফেব্রুয়ারি রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই দল যাওয়ায় যারপরনাই রেগে গিয়েছিলেন দিদি। ব্যারিকেড করে কলকাতা পুলিশ সিবিআই অফিসারদের আটকে দিয়েছিল। তারপরেই নগরপালের বাংলোতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেদিন রাতেই ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার স্বার্থে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। টানা তিনদিন চলে সেই ধর্না। তারপর সুপ্রিম কোর্ট রাজীবের গ্রেফতারিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরই নৈতিক জয় পেয়ে ধর্না তোলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ধর্না থেকে মমতা স্পষ্ট বলেছিলেন, ‘এর আগে তৃণমূলের অনেক নেতামন্ত্রীদের সিবিআই জেলে পুরেছিল। তখন কিছু বলিনি। কিন্তু ফোর্সের অপমান আমি মেনে নেব না। আমার ফোর্সকে আমি প্রোটেক্ট করবই।’ আর আজ দিল্লীর ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “দেশের গণতন্ত্রকে শেষ করে ফেলছে মোদী সরকার। এটা এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ সময়। মোদীবাবু, আপনি দেশকে ভাঙতে পারেন। কিন্তু আমরা দেশকে জুড়তে জানি। ডেমোক্রেসি এখন ‘মোদীক্রেসি’ হয়ে গিয়েছে। দেশকে তাই একসঙ্গে থাকতে হবে। একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে।”