যন্তর-মন্তরে সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিজেপি বিরোধী দলগুলি। আগামীকাল বুধবার সেখানে শুরু হবে ধর্না। আর সেই ধর্না সমাবেশে যোগ দিতে আজ মঙ্গলবার রাতেই দিল্লী পৌঁছে যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে যে দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির হয়েছিলেন, সেই দলগুলির প্রায় সবক’টিই বুধবার নয়াদিল্লির সমাবেশে যোগ দিচ্ছে। সব মিলিয়ে বিরোধী ঐক্যের আরও একদফা প্রদর্শনীর প্রস্তুতিতে আজ রাত থেকেই সরগরম হয়ে উঠতে চলেছে রাজধানী।
বুধবারের ধর্না সমাবেশের পর বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বৈঠক করতে পারেন বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে। দিল্লীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে থাকবেন, সেখানেই ওই বৈঠক হতে পারে বলে খবর। বিজেপি বিরোধী সমঝোতাকে আরও কতটা এগিয়ে নিয়ে যায়, বৈঠকে তা নিয়ে তো আলোচনা হবেই। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আরও বড় কোনও যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও কথা হতে পারে ওই বৈঠকে।
কলকাতার পুলিশ কমিশনারের সরকারি বাসভবনে সিবিআই হানার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যে সঙ্ঘাত শুরু হয়েছিল কেন্দ্রের, তার প্রেক্ষিতে ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করার সময়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার তাগিদেই তাঁর এই পদক্ষেপ। এই ধর্না আসলে ‘সত্যাগ্রহ’। তিনি ধর্নায় বসেছেন খবর পেয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি রাত থেকেই গোটা দেশের রাজনৈতিক শিবির থেকে ফোন আসতে শুরু করেছিল মমতার কাছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে চন্দ্রবাবু নায়ডু, অখিলেশ যাদব থেকে মায়বতী, তেজস্বী যাদব থেকে এমকে স্ট্যালিন, শরদ পাওয়ার থেকে শরদ যাদব – সমর্থন জানাতে শুরু করেছিলেন বিরোধী রাজনীতির মহারথীরা।
মমতার এই ধর্না যে সর্বভারতীয় স্তরের বিরোধী রজনীতির জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে চলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা অভ্রান্ত বুঝেছিলেন। তাই নিজের ধর্না মঞ্চকে বৃহত্তর মঞ্চ হিসেবেই তুলে ধরেছিলেন তিনি। মেট্রো চ্যানেলে নির্মিত মঞ্চটায় তৃণমূলের নাম, প্রতীক বা পতাকা ছিল না কোথাও। শুধু লেখা ছিল ‘সেভ ইন্ডিয়া’।
সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষিত হওয়ার পরে ধর্না প্রত্যাহার করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সে দিনই চন্দ্রবাবু নায়ডু কলকাতার ধর্না মঞ্চে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, লড়াই এখানেই শেষ নয়, এই লড়াইকে দিল্লী পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই ঘোষণা অনুসারেই বুধবার যন্তর-মন্তরে সমাবেশ হচ্ছে। তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই দিল্লী পৌঁছচ্ছেন। তবে বুধবার শুধু সমাবেশ নয়, একটি বড় মিছিলেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।