‘ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই নরেন্দ্র মোদী থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছেন।’ বুধবার ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার পাল্টা সভা থেকে ঠিক এই ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে তিনি এই অভিযোগও তুললেন যে, সিবিআই এখন আর নিরপেক্ষ নেই। সিবিআই এখন বিজেপির ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন হয়ে গিয়েছে। ওরা এখন বিজেপির রাজনৈতিক জোটসঙ্গী হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলার যেখানেই সভা করবে বিজেপি, ঠিক সেখানেই পাল্টা সভা করবে তাঁর দল। তাই গত ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগরে মোদীর সভার পরই পাল্টা সভায় প্রধানমন্ত্রীর ভিড়কে টপকে দেওয়ার দাবি করেছিল তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের ডাকে গতকালের সভায় যোগ দেন কয়েক হাজার মানুষ। সভায় ফ্রহাদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসু, ব্রাত্য বসুসহ জেলার তিন মন্ত্রী এবং নির্মল ঘোষ, নারায়ণ গোস্বামী, পার্থ ভৌমিক-সহ জেলার প্রায় সমস্ত নেতা-নেত্রীরা।
সিবিআইকে আক্রমণ করার পাশাপাশি গতকালের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গেরুয়া শিবিরকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, বাংলার মাটি সম্প্রীতির মাটি। মোদী এখানে বিভাজন করতে চাইছেন। ১৫ লক্ষ টাকা কোনও গরিব মানুষের পকেটে এখনও এল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া দেখে উনি থরথর করে কাঁপছেন।
এরপরই তাঁর খোঁচা, ‘আর তো দু’টো মাস। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর বদলে ওনাকে লিখতে হবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এখন ভাবছেন বড়মা বীণাপাণিদেবীর পা ছুঁলে হয়ত মতুয়াদের ভোট পাওয়া যাবে। কিন্তু, একদিনে সম্পর্ক গড়া যায় না। সম্পর্ক গড়তে গেলে কয়েক যুগ লাগে। বড়মার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুগ যুগ ধরে সুসম্পর্ক রয়েছে।
সিবিআই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘নোবেল কী ফিরে পাওয়া গিয়েছে? আমরাও আগে নেতাই, নন্দীগ্রামে সিবিআই চেয়েছিলাম। কিন্তু, কিছুই হয়নি। ভারতী ঘোষের নাম না করে তিনি বলেন, ওই যে পুলিশ অফিসার বিজেপিতে গেলেন, উনি গদ্দারের বন্ধু ছিলেন, উনি দেখলাম বিজেপির কেন্দ্রীয় অফিসে গিয়েছেন। পদ্মফুল ধরে ধোওয়া তুলসী পাতা হয়ে গেছেন।’
গতকাল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমরঞ্জন ঠাকুরের নামে এখানে কলেজ করেছেন। হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করছেন। মতুয়াদের জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ করেছেন। বড়মাকে বঙ্গবিভূষণ দিয়েছেন। আরও একঝাঁক উন্নয়ন করছেন। আর মোদীবাবু এখানে এসে শুধু ফাঁকা আওয়াজ ছেড়ে গেলেন। উনি আসলেও বনগাঁ লোকসভায় বিজেপি হারবে, না এলেও হারবে।