শিল্পমহলের তারকাখচিত ব্যক্তিদের নিয়ে রাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। ইতিমধ্যেই বিশ্ব বাংলা কনভেনশেন সেন্টারে শুরু হয়ে গেছে এই সম্মেলন। সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী লগ্নি-বার্তা দেন, তার জন্য অধীর আগ্রহে সকলেই।
শিল্পমহলের দাবি, লগ্নি টানার জন্য সবার আগে দরকার হয় জমি, পরিকাঠামো, প্রশাসনিক তৎপরতা আর সদিচ্ছা। এর মধ্যে সবকটিতেই দেশের বহু রাজ্যের থেকে অনেক এগিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ। খোদ ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের তালিকায় শিল্পবান্ধব রাজ্য হিসেবে বাংলা প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। লগ্নির জন্য প্রশাসনিক গেরো কাটানোর লক্ষ্যে দেশের সেরা দশের মধ্যে আছে রাজ্য।
লগ্নি টানতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই যেভাবে দেশ-বিদেশে দরবার করেছেন, তাতে শিল্প নিয়ে রাজ্যের সদিচ্ছা এখন প্রশ্নাতীত। বড় শিল্পের জন্য সবার আগে নজর রয়েছে গোয়ালতোড়ের উপর। সেখানে একলপ্তে ৯৫০ একর জমিতে সম্পূর্ণ পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে। রাজ্যের বস্ত্র শিল্পকে বিশ্ববাজারে জায়গা দিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৈরি হচ্ছে বস্ত্রতালুক, যেখানে ৯.৮৫ একর জায়গাজুড়ে ৭.২ লক্ষ বর্গফুটের পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে। হরিণঘাটায় ৩৫৮ একরের শিল্প তালুক গড়া হচ্ছে। এছাড়াও হাওড়ায় ফুড পার্কের বহর বাড়ানোর কাজও করছে রাজ্য। শিল্প দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এর পাশাপাশি শিল্পোন্নয়ন নিগমের আওতায় অনেকগুলি ছোট পার্ক হচ্ছে, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি থেকে উৎপাদন শিল্পকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সঙ্গে রয়েছে একাধিক বেসরকারি উদ্যোগ।
ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য পরিকাঠামো গড়ার দায়িত্ব ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের হাতে। বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে আসা প্রস্তাবিত লগ্নির কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই প্রতিটি মহকুমা ধরে জমির খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। এখানকার কর্তাদের কথায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় নিগমের হাতে ৭০৩ একর জমি ছিল। আগামী ছ’মাসের মধ্যে যাতে আরও ৭০০ একর তাদের ঝুলিতে আসে, তার জন্য প্রতিটি জেলাশাসকের কাছে দরবার করেছে তারা। এখান চেয়ারম্যান বিপ্লব রায়চৌধুরী কথায়, মুখ্যমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, শিল্পের জন্য জমির মাপ বাড়াতেই হবে। প্রতিটি জেলাতে শিল্পের জমি থাকলেও চলবে না। মহকুমা স্তরে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বিপ্লববাবুর দাবি, কয়েক মাসের তৎপরতায় বাণিজ্য সম্মেলনের আগেই তাঁরা ১০০ একরের বেশি জমি জোগাড় করেছেন। এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে ৯৪ একর, কালিম্পংয়ে ১০ একর এবং পশ্চিম বর্ধমানে সাত একর চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে অতি সত্ত্বর বেশ কিছু জমি হাতে আসবে বলে দাবি করেছেন তিনি। জেলাশাসকদের বক্তব্য অনুযায়ী আগামী মাসখানেকের মধ্যে জমির পরিমাণ আরও খানিকটা বাড়বে। সবক্ষেত্রেই শুধু ফাঁকা জমি নয়, ইচ্ছুক বিনিয়োগকারীর হাতে জল, বিদ্যুৎ, রাস্তা সহ সব রকম পরিকাঠামো তুলে দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছে নিগম।