‘মা’ উড়ালপুল পার্ক সার্কাস থেকে এজেপি বোস রোডের ফ্লাইওভার জুড়ে দেওয়ার এক কিলোমিটার দীর্ঘ আকাশ পথের কাজ সম্পূর্ণ। নবনির্মিত অংশের বহনক্ষমতার পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে এ মাস দিয়েই গাড়ি করে বাইপাস থেকে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে রেড রোডে।
অন্যদিকে, মা ফ্লাইওভারের পার্ক সার্কাস পয়েন্ট থেকে গড়িয়াহাট মুখী আর একটি নতুন উড়াল-পথ নির্মাণ শুরু হবে শীঘ্রই। ওই নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হলে গড়িয়াহাট থেকে গাড়ি নিয়ে আকাশ পথেই সটান পৌঁছে যাওয়া যাবে চিংড়িঘাটা কাছের বাইপাসে। উড়ালপুল নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি ‘মা’ ফ্লাইওভারের নতুন অংশের সূচনা হবে।’
মা ফ্লাইওভার দিয়ে বাইপাস থেকে এসে সরাসরি এজেসি বোস উড়ালপুলে ওঠার রাস্তা তৈরির জন্য ২০১২ সাল থেকেই চেষ্টা করছিল কেএমডিএ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তৎপর ছিলেন দ্রুত পার্ক সার্কাসের ‘সেভেন পয়েন্ট’-এর উপর দিয়ে আকাশ পথ গড়ে দিতে। কিন্তু নানা ইস্যুতে মামলা হওয়ায় সেই কাজ পিছিয়ে যায়। অবশেষে রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা কোর্টকে বোঝাতে সক্ষম হন যে জনস্বার্থে ওই উড়ালপুল দ্রুত হওয়া জরুরি। শেষে আদালতের নির্দেশে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে কাজ শুরু করে কেএমডিএ।
প্রথমে ২০১৮ সালের মে মাস ও পরে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ করার সময়সীমা ধার্য করে কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু একদিনও পার্ক সার্কাস সেভেন-পয়েন্ট বন্ধ না করে অসীম ধৈর্য পরীক্ষা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কেএমডিএ-এর ইঞ্জিনিয়ররা ধাপে ধাপে নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। বেশ কয়েকবার স্বয়ং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেছেন। ব্যস্ত রাস্তার ওপরে কাজ অত্যন্ত সন্তর্পনে করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। অবশেষে সেই নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাইটস-এর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নয়া ফ্লাইওভার পরিদর্শন করেন কেএমডিএ-এর ইঞ্জিনিয়াররা।
এবার যাতে গড়িয়াহাট অংশেরও নির্মাণ শুরু করা যায় তা নিয়ে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ারদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন মন্ত্রী। কারণ, গড়িয়াহাট অংশের মাটি পরীক্ষার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দু-তিন মাসের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘ভারী যানবাহন কতটা নিতে পারবে ফ্লাইওভারের অংশ তা রাইটস
পরীক্ষা করেছে। রিপাের্ট হাতে চলে আসবে দু’একদিনের মধ্যেই। এখন রং ও অন্যান্য কাজ চলছে। এবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত এর সূচনা করাতে পারলেই শহরবাসীকে আরও একটু গতির পথে এগিয়ে দিতে পারবে রাজ্য সরকার।’
কেএমডিএ সূত্রে খবর, পাকসার্কাস সেভেন পয়েন্ট থেকে নয়া ফ্লাইওভারের অংশ জুড়ছে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি হয়ে আইটিআই কলেজের কাছ পর্যন্ত। রাইটস, কলকাতা পুরসভা ও কেএমডিএ যৌথভাবে পর্যবেক্ষণ এবং প্রকল্পের ডিপিআর চূড়ান্ত করে দিয়েছে। রাইটস ইতিমধ্যেই প্রকল্পের যাবতীয় রিপোর্ট জমা দিয়েছে। নতুন রাস্তা হবে মোট ১.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। যার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে কেএমডিএ। নির্মাণ শুরু হওয়ার পর কাজ শেষ হতে সময় লাগবে দু’বছর।