বেঙ্গালুরু : বুধবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে আরসিবির আইপিএল জয়ের বিজয়োৎসবে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। আহত হয়েছেন ৫০-এরও বেশি। বেঙ্গালুরুর এই মর্মান্তিক ঘটনায়(Bengaluru Stampede) ইতিমধ্যেই তোলপাড় সারা দেশ। প্রশ্নের মুখে পড়েছে কর্ণাটক প্রশাসন। ঘটনার এক দিন পর জানা গেল, পুলিশের অনুরোধ আরসিবি কর্তৃপক্ষ না শোনার কারণেই নাকি দুর্ঘটনা ঘটেছে। বুধবারের বদলে রবিবার এই অনুষ্ঠান করার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু রাজি হয়নি আরসিবি কর্তৃপক্ষ।
Read More: ১২টি দেশের নাগরিকরা ঢুকতে পারবেন না আমেরিকায়, নিষেধাজ্ঞা জারি ট্রাম্পের
এদিন ‘ডেকান হেরাল্ড’ সংবাদপত্রের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, পুলিশের তরফে আরসিবি ম্যানেজমেন্ট এবং রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল, যাতে বুধবার কোনও অনুষ্ঠান না করা হয়। আরসিবি ১৮ বছর পর মানুষের আবেগ ছিল চরমে। তাই শোভাযাত্রা জাতীয় কোনও কিছু হলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে এমন আশঙ্কা ছিল পুলিশের।
পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, “আমরা মঙ্গলবার রাত থেকেই আরসিবি ম্যানেজমেন্ট এবং সরকারকে অনুরোধ করতে শুরু করেছিলাম যাতে বুধবার কোনও অনুষ্ঠান না করা হয়। পরের রবিবার আয়োজন করতে বলা হয়েছিল। তত দিনে মানুষের আবেগ একটু হলেও ঠান্ডা হত। শোভাযাত্রা নিয়েও আপত্তি তুলেছিলাম আমরা। পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে কোনও একটি জায়গায় সংগঠিত ভাবে অনুষ্ঠান করার।”

তবে সেই পরিকল্পনায় রাজি হয়নি আরসিবি কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছিল, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে এমনিতেই সূচি এক সপ্তাহ পিছিয়ে গিয়েছে। রবিবার অনুষ্ঠান করা হলে অনেক বিদেশি ক্রিকেটারকে পাওয়া যাবে না। তাই বুধবারই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চেয়েছিল তারা। অনুমতি মিলেছিল সরকারেরও। এক পুলিশকর্মী বলেছেন, “ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় ছিলাম। পুলিশ কমিশনার থেকে কনস্টেবল, সকলে ছিলেন। প্রত্যেকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এমন উন্মাদনা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1930604615609053653
বুধবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম এবং তার বাইরে জড়ো হয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সেখানে ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্টের(Bengaluru Stampede) ঘটনা ঘটে। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, ঘোষণা করেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘এত মানুষ চলে আসবেন, আমরা ভাবতে পারিনি। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৩৩ হাজার। সেখানে দু’তিন লক্ষ মানুষ ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। স্টেডিয়ামের দরজাটাও ছোট। ভিড়ের ঠেলায় তা ভেঙে যায়। এই জমায়েত কেউ আশা করেননি। তবে যা হয়েছে, আমি তার জন্য কোনও অজুহাত দিতে চাই না।’’
পাশাপাশি, ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। তার জন্য ১৫ দিন সময় দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কমবয়সি। আমি গভীর ভাবে শোকাহত। এই যন্ত্রণা আইপিএল জয়ের আনন্দকে মুছে দিল। যা হয়েছে, তা হওয়ার কথা ছিল না।’’ হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, আহতেরা সকলেই আপাতত বিপন্মুক্ত। কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার বলেন, ‘‘ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিল পুলিশ। এই বিপুল ভিড় নিয়ন্ত্রণ করাই যাচ্ছিল না। কমবয়সিদের জমায়েতে তো আর লাঠিচার্জ করা যায় না! সেই কারণেই ট্রফি নিয়ে শোভাযাত্রার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হয়েছে। মাত্র ১০ মিনিটে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও এড়ানো যায়নি দুর্ঘটনা।’’