বিগত বহুদিন ধরেই বাংলার বরাদ্দ গ্রামীণ সড়ক তৈরির টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও কাজ থামিয়ে রাখেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার রাজ্যজুড়ে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিল নবান্ন। আগামী দু’মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার (৯৮৩.৯৫ কিলোমিটার) রাস্তা সংস্কার অথবা নতুনভাবে তৈরি করতে চলেছে রাজ্য। এর জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৫২৭ কোটি টাকা। মোট ১১৯টি প্রকল্পের মাধ্যমে এই কাজ করা হচ্ছে। কোনওটির কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ শতাংশ, আবার কোনওটির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ। প্রতিটি প্রকল্প ধরে ধরে কাজের অগ্রগতির মূল্যায়ন করেছে পূর্তদফতর। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রত্যেকটি কাজ শেষ করার সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলাই পূর্তদফতরের এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে চলেছে।
প্রসঙ্গত, উক্ত তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার মুড়াগাছা থেকে কাঁপা মোড় পর্যন্ত কল্যানী এক্সপ্রেসওয়ের সম্প্রসারণ, হাওড়ার সালকিয়া চণ্ডীতলা রোড, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-খেঁজুরি রোডের সম্প্রসারণ, বীরভূমের আহমেদপুর কীর্ণাহার-রামজীবনপুর রোড, হুগলির মশাট-ধিতপুর রোড, ঝাড়গ্রামের হাতিগেরিয়া কুলটিকরি রোহিনী রোগরা রোড, নদীয়ার তারাপুর-বোলাগরঘাট রোড, মালদহের বামনগোলা-হবিবপুর রোড, আলিপুরদুয়ারের কালচিনি-পাইটকাপাড়া রোড ইত্যাদি। দার্জিলিং জেলার বেশ কিছু রাস্তাও রয়েছে এই তালিকায়।
এই তালিকায় রয়েছে ছোট বড় ১৪টি সেতুও। এদের নির্মাণকাজ হয়ে গেলে একেবারে প্রান্তিক এলাকায় ‘লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি’ উন্নত হবে বলেই জানাচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহল। সম্প্রতি পূর্তদফতরের শীর্ষকর্তারা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে ছিলেন দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়ও। সেখানে প্রত্যেকটি প্রকল্প সময়সীমার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় নিজের কোষাগার থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৩২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কেন্দ্র আবাসের টাকা না দেওয়ায় রাজ্য ‘বাংলার বাড়ি’র টাকা দিচ্ছে ২৮ লক্ষ মানুষকে। ১০০ দিনের কাজের পরিবর্তে রাজ্যে চলছে কর্মশ্রী প্রকল্প। এই পরিস্থিতিতেও রাজ্য সরকার পূর্তদফতরের মাধ্যমে যোগাযোগ পরিকাঠামোর উন্নয়ন অব্যাহত রাখছে।