বাংলায় সরকারি স্কুলগুলির উন্নতিসাধনে বরাবরই বিশেষভাবে উদ্যোগী থেকেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ধারাবাহিকতার দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্বে পৌঁছনোর লক্ষণ রয়েছে, এমন ১৩১৩টি স্কুলের মানোন্নয়নে বিগত এক বছর ধরেই চেষ্টা করছিল রাজ্য স্কুলশিক্ষা দফতর। যে কাজে দফতরের সহযোগী ‘ইউনিসেফ’। বৃহস্পতিবার নেতৃত্ব ব্যবস্থাপনার পাঠের প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আয়োজিত কর্মশালা থেকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তুলে ধরলেন সেই উদ্যোগের কথা। তিনি বলেন, “সরকারি স্কুলগুলোর আরও কী করে উন্নতি ঘটানো যায়, তার জন্য ইউনিসেফের সঙ্গেও একটা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।” জানা গিয়েছে, উদ্যোগের অধীনে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ডের ভিত্তিতে বেছে নেওয়া হয়েছিল ১৩১৩টি স্কুলকে। ভালো স্কুল হয়ে ওঠার লক্ষণ যেমন, ছিল নির্বাচিত স্কুলগুলির। এই স্কুলগুলিকে চিহ্নিত করার মানদণ্ড, মানন্নোয়ন কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তা তৈরি করে দিয়েছিল ইউনিসেফ। তা অনুযায়ী, পরিকাঠামোর মানন্নোয়নে অনুদান দেওয়া, প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও বর্তমানে সব স্কুলে চালু থাকা আনন্দ পরিসরের মতো উদ্যোগগুলি আগে ওই স্কুলগুলিতে চালু করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ এক বছর পরে ওই স্কুলগুলির পারফর্ম্যান্স ভালো হয়েছে অন্য স্কুলগুলির থেকে।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, আরও ১ হাজার স্কুলকে এই উদ্যোগের আওতায় আনার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের নেতৃত্ব ব্যবস্থাপনার পাঠ দিতে আইআইএম জোকার শিক্ষকদের দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। প্রথম পর্যায়ে ৯৮৫ জন ও দ্বিতীয় দফায় ৬২৬ জনকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের আর্থিক খরচ বহন করছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। এদিন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নিয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হল ধনধান্য অডিটোরিয়ামে। সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা কতটা লাভবান হয়েছেন, স্কুলে কতটা কার্যকর করতে পেরেছেন, তা ৯টি উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।।শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, “আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, সরকারি স্কুলগুলোর মানোন্নয়ন। সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছিল, সেটা আমাদের ভাবাচ্ছিল। আমরা দেখলাম, অন্যের সমালোচনা না করে আমাদের স্কুলগুলোকেই তুলে ধরতে হবে। সেই লক্ষ্যেই এটা করলাম।” উল্লেখ্য, চলতি শিক্ষাবর্ষে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে আরও ১ হাজার শিক্ষককে।