রাফাল ইস্যুতে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপে এনডিএ সরকার। কংগ্রেস সভাপতি হ্যাঁ বা না-এ জবাব চেয়েছিলেন। উত্তর দিতে উঠেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু আড়াই ঘণ্টা ধরে রাফাল নিয়ে নানা কথা বললেও সেই জবাব কিন্তু এড়িয়েই গেলেন নির্মলা সীতারামন। তার পরিবর্তে বললেন, ‘ইউপিএ–২ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এই রাফাল নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারেনি। অন্যদিকে চীন–পাকিস্তান তাদের প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়িয়ে চলেছে। এতদিনে রাফাল চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। যার ফলে ভারতীয় বায়ুসেনা আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমান হাতে পাবে’। অর্থাৎ প্রশ্ন এড়িয়ে পাল্টা বিরোধীদের আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু কেন ১২৬টি থেকে কমে ৩৬টি রাফাল কেনা হচ্ছে? কেন বাড়তি দাম দেওয়া হচ্ছে? রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে বাদ দিয়ে কেন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হল? এইসব প্রশ্নের জবাব সরাসরি দেননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ফলে নিজে সংসদে না থেকেও দুদিন ধরে ফৌজ নামিয়ে রাফাল বিতর্কে ইতি টানার যে চেষ্টা মোদী চালিয়েছিলেন, তা বৃথাই গেল। উল্টে ভোটের আগে বিরোধীদের রাফাল অস্ত্র আরও ধারালো হয়ে উঠল।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর যাবতীয় বক্তব্যের সারাৎসার এটাই যে, রাফালের সঙ্গে বফর্সের তুলনাই হয় না। কারণ বফর্স ছিল কেলেঙ্কারি, যার জেরে ক্ষমতা হারায় কংগ্রেস। আর রাফাল নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে। দীর্ঘ ভাষণে নির্মলা একবারও বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দেওয়ার চেষ্টাও করলেন না। শুধু বললেন, ‘২০১৯ সালের মধ্যে প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতে আসবে। তারপর চুক্তি অনুযায়ী সমস্ত যুদ্ধবিমান ২০২২ সালের মধ্যে দেশে আসবে। এতদিন কংগ্রেসের কেন এই যুদ্ধবিমান প্রয়োজনীয় বলে মনে হয়নি? এই যুদ্ধবিমান তৈরি করতে সময় লাগে। তাছাড়া দাসঁর সঙ্গে উপযুক্ত সময়ে বানাতে সক্ষম হয়নি হ্যাল। তাই তাদের অফসেট পার্টনার করা যায়নি। প্রতিরক্ষার বিষয় গোপন রাখা উচিত। সেখানে কোনও কথা না শুনে কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলছে’।
এতকিছুর পরেও রাফাল চুক্তি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেল। কারণ রাফাল নিয়ে কোনও কিছু খোলসা হল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।